ছাত্রলীগের কিছু কর্মকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষোভ থাকতে পারে। তবে গতকালকের মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় কমিটি ভেঙে দেয়ার বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে এসেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকালকে আমাদের যে মিটিং ছিল সেটা পার্লামেন্টারি বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভা। রংপুরের ইলেকশন, ২২টি ইউনিয়ন পরিষদ, তিনটি পৌরসভা, সাতটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হচ্ছে অক্টোবরে। এজন্যই আমরা বসেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, মনোনয়ন বোর্ডের মিটিংয়ে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কথা প্রসঙ্গে হয়তো কথা আসে। এটা সিদ্ধান্ত আকারে কোনো কথা হয়নি। কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে সেটা সিদ্ধান্তের ফোরাম ওটা ছিল না। কাজে ওখানে ইনসাইডে আমরা অনেক কথাই বলতে পারি, অনেক আলোচনাই করতে পারি। এখানে কোন কোন প্রসঙ্গে ক্ষোভের প্রকাশও হতে পারে। কারও কারও রিঅ্যাকশনও আসতে পারে। কিন্তু অ্যাজ এ জেনারেল সেক্রেটারি অব দ্য পার্টি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা এ মুহূর্তে ঠিক হবে না। যতক্ষণ না পর্যন্ত এটা ইমপ্লিমেন্টশন প্রসেসে যায়। এখানে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটতে পারে, প্রতিক্রিয়া হতে পারে কিন্তু এটা কোন সিদ্ধান্ত আকারে কিছু হয়নি।
ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কি ক্ষুব্ধ- এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কিছু ব্যাপারে তো থাকতেই পারে। যেমন- আমাদের ইলেকশনে যারা বিদ্রোহী ছিল, আমাদের মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে, নেতাদের মধ্যে- এ সব ব্যাপারে তো ক্ষোভ প্রকাশ হয়। কাজেই ছাত্রলীগেরও বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত কিছু কিছু ব্যাপার আছে, সেগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কনসার্ন থাকতেই পারে, এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু এখানে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমি জানি না, কারণ ওই ফোরামে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনার বিষয় আসেনি।
ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গণভবন থেকে চলে যেতে বলেছেন- এ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, আমি তাদের চলে যেতে বলব কেন? প্রাইম মিনিস্টারের সঙ্গে ওখানে দেখা করতে গেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে নেতারা গেছে, ছাত্রলীগ গেছে। প্রাইম মিনিস্টারের বাড়িতে তারা গেছে আমি কীভাবে বলি তোমরা এখান থেকে চলে যাও। আসলে কিছু কিছু খবর হাওয়া থেকে পাওয়া হয়ে যায়, একটা হয় আর একটা আসে। নানাভাবে ছড়ায়। বাস্তবতাটা ভিন্ন।
আমার মনে হয় এ ধরনের কিছু হলে আপনারা তো দেখবেনই। এ ধরনের কিছু হতে গেলে তো এটা পাবলিক স্টেটমেন্ট। ডিসিশনটা জানা যাবে, এটা তো ওপেন সিক্রেট হয়ে যাবে, তখন সিক্রেট থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী কমিটি ভেঙে দেয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর আসা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দেয়ার জন্য মিটিং হয়নি। কাজেই আমি এ কথাটি কেন এখানে বলব। প্রধানমন্ত্রী কি মিটিংয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে একথা বলেছেন, না বলেননি- কোনটাই আমি বলব না। যতক্ষণ না সিদ্ধান্তটা কার্যকর না হচ্ছে, যতক্ষণ পযর্ন্ত এটা সিদ্ধান্ত আকারে না আসছে ততক্ষণ পর্যন্ত এর সত্যতা আমি স্বীকার করব না।
বর্তমান কমিটির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে আপনি সন্তষ্ট কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, যেগুলো সন্তোষ প্রকাশের মতো সেগুলোতে সন্তোষ প্রকাশ করি, আর যেগুলো লোকে পছন্দ করে না সেগুলো আমিও পছন্দ করব না। এটাই খুব স্বাভাবিক এবং সে ব্যাপারে আমি তাদের সতর্ক হতে বলি, সাবধান হতে বলি, তাদের সুনামের ধারায় ফিরে আসতে বলি। তাদের ভালো খবরের শিরোনাম হতে বলি- এটা আমি অহরহ বলে যাচ্ছি।