তিন দশক পর ডাকসু নির্বাচন হওয়ার পর গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীরা অভিশপ্ত গণরুম প্রথা থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখে। কিন্তু ডাকসু গঠন হওয়ার ছয় মাস পরও এ অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে না পেরে শিক্ষার্থীরা হতাশ।
গত কয়েকদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণরুমে থাকা প্রথমবর্ষের এক শিক্ষার্থীর ছারপোকার কামড়ে পিঠের উপরাংশে ক্ষত সৃষ্টি হয়। ক্ষত অংশের ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দেয়ার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা কমেন্টে গণরুমের আরও নৃশংসতার কথা ও চিত্র তুলে ধরেন।
কিন্তু শিক্ষার্থীদের এসব সমস্যার সমাধান না করে উল্টো দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানীর ডাকসুর নিজ অফিস কক্ষে কয়েক সপ্তাহ আগে নতুন এয়ার কন্ডিশন (এসি) লাগানো হয়। এতে শিক্ষার্থী ও ছাত্রপ্রতিনিধিদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
জিএসের রুমে এসি লাগানোর বিষয়ে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, যেখানে ছাত্ররা গণরুমে পচে মরেতেছে সেখানে একজন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে জিএস তার অফিস কক্ষে কোনোভাবেই এসি লাগাতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী আছেন, যাদের ফ্যান লাগানোরই ব্যবস্থা নেই, গরমে ঘুমাতে পারেন না সেখানে একজন এত বড় ছাত্র প্রতিনিধির রুমে কোনোভাবেই এসি লাগানো আমি নৈতিকভাবে সমর্থন করি না।
ডাকসুর ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ তানভীর বলেন, রাব্বানী ভাইকে একজন এসি গিফট করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এসি লাগানোর ফান্ডিং নাই। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ডাকসু সভাকক্ষে এসি লাগানোর জন্য আমরা বলছি।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক শেখ নকিবুল হাসান সুমন বলেন,একজন ছাত্রনেতা কোনোভাবেই রুমে এসি লাগাতে পারেন না। এসির ভেতরে বসে শিক্ষার্থীদের কষ্ট অনুভব করা যায় না। একজন ছাত্রনেতার কখনও বিলাসী জীবনযাপন করা উচিত নয়।
তবে এসব বিষয়ে জানতে কয়েকদিন ধরে ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানীকে ফোন দিলেও তিনি কোনো সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ করেন না।
এ ছাড়াও নির্বাচনের আগে শিক্ষার্থীদের কাছে বিলি করা নম্বরেও শিক্ষার্থীদের কোনো জরুরি সমস্যায় তার কাছে ফোন দিলে সে ফোনও রিসিভ করেন না।