বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

আগ্রহ নেই লঞ্চ যাত্রীদের, বরিশালে বুকিং কাউন্টার ফাঁকা

আগ্রহ নেই লঞ্চ যাত্রীদের, বরিশালে বুকিং কাউন্টার ফাঁকা

দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আর সরকারি ছুটি কম থাকায় পবিত্র ঈদুল আযহায় নাড়ীর টানে বাড়ি ফেরা লঞ্চ যাত্রীদের আগ্রহ অনেকটা কমেছে। গত বছর কোরবানির অগ্রিম টিকিট বিক্রিকালে হাহাকার আর বুকিং কাউন্টারগুলোতে পা রাখা জায়গা না থাকলেও এবছর দেখা গেছে এর উল্টোচিত্র। বিগত বছরগুলোতে আগাম টিকিট কোরবানির এক সপ্তাহ আগে বিক্রি শেষ হলেও এবার কাউন্টারগুলো অধিকাংশ সময় থাকছে ফাঁকা।

লঞ্চের টিকিট বুকিং কাউন্টার সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে শনিবার (১৮ জুলাই) থেকে শুরু হয়েছে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে লঞ্চের কেবিনের অগ্রিম টিকিট বুকিং কার্যক্রম। বিক্রির শুরুর এক সপ্তাহের বেশি অতিবাহিত হলেও স্বাভাবিক দিনের মতোই কেবিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। অগ্রিম টিকিট প্রত্যাশীদের চাপ কম থাকায় দিনের বেশির ভাগ সময় কাউন্টারগুলো ফাঁকা থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এমভি মানামী লঞ্চের টিকিট বুকিং কাউন্টারের দুই কর্মচারী ছাড়া কেউ নেই। এমভি কুয়াকাটা ২ টিকিট কাউন্টার একজন অগ্রিম টিকিট প্রত্যাশী থাকলেও তারা তিন/চার দিনে মাত্র ১৫-১৬টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করে বুকিং দিয়েছেন।

এছাড়াও এমভি সুন্দরবন ও এমভি সুরভী লঞ্চের টিকিট বুকিং কাউন্টারের দেখা গেছে, ঘণ্টায় ১০-১২ জন অগ্রিম টিকিট নিলেও বাকি সময়টায় কাউন্টার থাকে ফাঁকা।

আরও জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল নৌপথে রোটেশন অনুযায়ী ২৪-২৫টির মতো বেসরকারি লঞ্চ এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিসি) পাঁচটি জাহাজ ও স্টিমার চলাচল করে।


করোনা পরিস্থিতিতে এখনো ঈদের বিশেষ সেবা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে শেষের দিকে যাত্রীর চাপের ওপর নির্ভর করবে বিশেষ সেবার ব্যবস্থা।

সুন্দরবন লঞ্চের টিকিট বুকিং কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট বুকিং দিতে আসা কামরুল হুদা জানান, প্রতিবছর ঢাকা থেকে তার বড় দুইভাই পরিবারসহ বরিশালের জাগুয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে ঈদের ছুটিতে আসেন। তাই লঞ্চে ৬/৭টা কেবিন বুকিং দেন। কিন্তু এবার করোনার কারণে তার ভাইয়ের পরিবার ঢাকায় অবস্থান করায় বড় ভাইয়ের জন্য মাত্র একটি কেবিন বুকিং দেন তিনি।

এমভি সুরভী লঞ্চের টিকিট বুকিং কাউন্টার ইনচার্জ মো. ফারহান ফেরদাউস বলেন, ‘শুধু বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) একদিনের অগ্রিম টিকিটের কিছু চাপ থাকলেও টিকিট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। এবার কোরবানির এক সপ্তাহ আগে মাত্র ৩০ ভাগ টিকিট বিক্রি হলেও সামনের দিনগুলোতে বাকি টিকিট বিক্রি নিয়ে আছি দুশ্চিন্তায়। কেননা এবার করোনার কারণে সরকারি ছুটি কম, আবার ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা থাকার কথাও শোনা গেছে।’

এমভি কুয়াকাটা ২ লঞ্চ কোম্পানির ব্যবস্থাপক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘করোনার কারণে চলতি বছরে গেল ঈদুল ফিতরে লঞ্চ চলাচল বন্ধের সেই লোকসান কাটিয়ে কোরবানিতে সমান সমান থাকার আশা করছিলাম। কিন্তু কোরবানিতে অগ্রিম টিকিট বিক্রির কোনো প্রভাব পড়েনি। তিন/চার দিনে মাত্র ১৫/১৬টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেছি। এতে করে দিনে দিনে লোকসানের পাল্লা বেড়ে যাচ্ছে।

বরিশাল সুন্দরবন নেভিগেশন ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘করোনার কারণে কোরবানি উপলক্ষে বাড়ি ফেরা মানুষের লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের কোনো প্রভাব পড়েনি। গত বছর এই দিনে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করে দিশেহারা হয়ে যেতাম। সবার চাহিদা পূরণ করতে পারতাম না।’

তিনি আরও বলেন, ‘অগ্রিম টিকিট বিক্রির আগে স্লিপ দেয়া হলেও ৫টি কেবিনের চাহিদার বিপরীতে ২/৩ দেয়া হত। এবার স্লিপ তো দূরের কথা অগ্রিম টিকিট বিক্রির শুরুর ৮ দিনেও ৩৫ ভাগ টিকিটও বিক্রি হয়নি। যাত্রীদের কোরবানি যাত্রায় আগ্রহ কম থাকায় দিনের বেশিভাগ সময়ই টিকিট বুকিং কাউন্টার ফাঁকা থাকে।’

এমন দশা চলমান থাকলে কোরবানির সময় প্রতিটি লঞ্চযাত্রায় লোকসানের উপরেও লোকসান হবে বলে ধারণা করছেন এই কাউন্টার ব্যবস্থাপক।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech