বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

বরিশালে ইলিশ উৎপাদনে রেকর্ড

বরিশালে ইলিশ উৎপাদনে রেকর্ড

বরিশাল জেলায় গত বছরের তুলনায় প্রায় আট হাজার মেট্রিক টন ইলিশ বেশি আহরিত হয়েছে। এই রেকর্ড সংখ্যক ইলিশ আহরণের পিছনে জাটকা নিধন প্রতিরোধ ও মা ইলিশ রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে দেশের অন্যতম অর্থকরী মৎস্য সম্পদ চিংড়ি উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছে এখানকার দুটি উপজেলা। সাধারণত এই অঞ্চলের মৎস্য চাষীদের কাছে চিংড়ি চাষ জনপ্রিয় নয়। বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য দপ্তর থেকে কর্মকর্তারা বলেন মিঠা পানির চিংড়ি চাষে বরিশালে রয়েছে প্রচুর অপার সম্ভাবনা।

বরিশাল জেলার ১২ টি নদীর আয়তন এক লক্ষ তিন হাজার দুইশত উনপঞ্চাশ হেক্টর। এসব নদী থেকে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪২ হাজার ৩৮৮ মেট্রিক টন ইলিশ আহরোণ হয়েছিল। চলতি বছরে এই পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে পঞ্চাশ হাজার মেট্রিকটন। আর এই সাফল্যের পিছনে মা ইলিশ রক্ষা ও জাটকা নিধন প্রতিরোধে বিভিন্ন কার্যক্রমের সফলতাই প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সূত্রমতে গত অর্থবছরে বরিশাল জেলায় মা ইলিশ রক্ষা করা কাজে সরকার নির্ধারিত সময়ে অবৈধভাবে মাছ শিকারের অপরাধে ৮৭৩ টি মামলায় ৫৭১ জেলেকে কারাদন্ড দিয়েছিলো ভ্রাম্যমান প্রশাসন। এছাড়া এসকল অপরাধে ২৪ লক্ষ ১৬ হাজার ৫০০ টাকা অর্থ জরিমানা করা হয়। যা ছিল গত বছরে দেশের সকল জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ জরিমানার করার রেকর্ড।

একই সঙ্গে জাটকা নিধন প্রতিরোধে ৪২৪ টি মামলায় ৩২৫ জনকে কারাদন্ড দেয়া হয় গতবছর। একই সঙ্গে জাটকা রক্ষায় ৫ লক্ষ ৯০ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এসব কারণে বরিশাল জেলায় এ বছর রেকর্ড সংখ্যক ইলিশ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন মৎস্য কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে, জেলার দশটি উপজেলায় সরকারি ২৭৮ টি ও বেসরকারি ৬৭ হাজার ৯৬৩ টি বদ্ধ জলাশয় রয়েছে। এগুলোর মোট আয়তন আট হাজার আটশো একান্ন দশমিক সাতাশি হেক্টর। এগুলোর মধ্যে আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন জলাশয়ে মিঠা পানির গলদা চিংড়ি পালনে প্রচুর সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে জেলার মৎস্য বিভাগ। জেলার নিবন্ধিত ৪৪ হাজার ৪২৩ জন মৎস্য চাষী সহ অন্যান্যদের মাঝে চিংড়ি চাষ জনপ্রিয় করার ব্যাপারে সহযোগী মনোভাব প্রকাশ করেছেন বরিশাল জেলা মৎস্য দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মৎস্য চাষ উৎপাদনের ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সাইদ বলেন, এই মৌসুমে জাটকা নিধন প্রতিরোধ ও মা ইলিশ রক্ষা করার জন্য কঠোর নজরদারি রেখেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য দপ্তর। যে কারণে ইলিশের ব্যাপক উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। অপরদিকে জেলার দুটি উপজেলায় (আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর) বিগত কয়েক বছর যাবত চিংড়ি উৎপাদন বাড়ছে। জেলার নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মৎস্য চাষীদের যদি চিংড়ি চাষের ব্যাপারে উৎসাহী করা যায় তবে ব্যাপক সম্ভাবনা ও সাফল্য ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। আর এজন্য জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণের প্রতি জোর দেন তিনি।

এছাড়া এবছর বিভাগের মনপুরা, চরফ্যাশন সহ বরিশাল জেলার বানারীপাড়ার সন্ধা নদী সহ বেশ কয়েকটি নদী থেকে মৎস্য কিারীদের জালে ২ থেকে ৩কেজি ওজনের ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেরা দামও পাচ্ছে ভালো বলে জানান বিভিন্ন মৎস্য খুচরা বিক্রিতারা

এ ব্যাপারে বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান জানান, মা ইলিশ রক্ষা ও জাটকা নিধন বন্ধে যথেষ্ট সোচ্চার ছিলেন তারা। এ কারণে ইলিশের বৃহৎ আহরণ সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে সরকার ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বরিশালের সংশ্লিষ্টরা যদি সেগুলো বাস্তবায়নে তৎপর হন তবে আরো বেশি ইলিশ এ জেলায় উৎপাদন সম্ভব।

এছাড়া তিনি বলেন,‘দেশে যেসকল অর্থকরী মৎস্য সম্পদ আছে তার মধ্যে চিংড়ি অন্যতম। বরিশালে জলাশয় এবং পানির কোন অভাব নেই। স্বাদু পানিতে যে চিংড়ি পালন করা যায় সেটা এখানে বৃহদাকারে উৎপাদন সম্ভব। এ ব্যাপারে এখানকার মৎস্য চাষীদের নজর দেয়া উচিত। চিংড়ি চাষে সংশ্লিষ্ট মৎস্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন সব রকম সহায়তা করবে বলেও জানান।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech