নিউজ ডেস্ক:
চলতি বছরের ২৬ মে থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ট্রেজারার এ কে এম মাহবুব হাসান অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাঁর চাকরির চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ আগামী ৭ অক্টোবর শেষ হচ্ছে। কিন্তু নতুন উপাচার্য বা ট্রেজারার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি। এ অবস্থায় আগামী ১৯ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, একই সঙ্গে উপাচার্য ও ট্রেজারার ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ও দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে।
তবে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা ববির ট্রেজারার অধ্যাপক ড. এ কে এম মাহবুব হাসান ছাত্র-শিক্ষকসহ সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মোবাইল ফোনে সোমবার বলেন, আগামী বুধবার শিক্ষামন্ত্রী তাঁর মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে সভা করবেন। সেখানে বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসে শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে চা চক্রের আয়োজন করেন সাবেক উপাচার্য এস এম ইমামুল হক। শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ জানালে উপাচার্য তাঁদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে মন্তব্য করেন। এর প্রতিবাদে আন্দোলনের মুখে উপাচার্য এস এম ইমামুল হককে ব্যক্তিগত ও প্রশাসনিক প্রয়োজনে ১১ এপ্রিল থেকে ২৬ মে পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়। এই সময়কালে তাঁর অনুপস্থিতিতে ট্রেজারার এ কে এম মাহবুব হাসান নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন বলে আদেশে বলা হয়। একই দিন (২৬ মে) তাঁর কার্যকালের মেয়াদও (চার বছর) শেষ হয়েছে। সেই থেকেই ট্রেজারার মাহবুব উপাচার্যের অতিরিক্ত +দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আগামী ৭ অক্টোবর তাঁর কার্যকালের মেয়াদও (চার বছর) শেষ হচ্ছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি ইউনিটে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে চার বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) কোর্সের প্রথম বর্ষে ভর্তি আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে শুরু হবে। ফরম বিতরণ ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এরই মধ্যে প্রায় দেড় হাজার আসনের বিপরীত ৩০ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপাচার্য কিংবা ট্রেজারার ছাড়া এই ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। ট্রেজারারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। ববির আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা এবং রুটিন কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়ার জন্য এই দুটি বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ আশা করছেন শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বলেন, উপাচার্য এস এম ইমামুল হককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর পর থেকেই ট্রেজারার অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আগামী ৭ অক্টোবর ট্রেজারারের মেয়াদকাল শেষ হচ্ছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। শুধু তাই নয়, আগামী ১৮ ও ১৯ অক্টোবরের ভর্তি পরীক্ষাও হুমকির মুখে পড়বে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত পদক্ষেপ আশা করেন তিনি।