বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

চলতি বছর বরিশাল জেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ

চলতি বছর বরিশাল জেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ

দেশের অন্যান্য স্থানের মত বরিশালেও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ২০১৯ সালের শেষদিকে এবং চলতি বছরের গত প্রায় ২ মাস যাবত পেঁয়াজের দামে বিরাজ করছে অস্থিরতা। যদিও সরকারি নির্দেশের অংশ হিসেবে বাজারের চাইতে তুলনামূলক কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি। তবে তা বরিশালের পাইকারী এবং খুচরা বাজারে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।

পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সিন্ডিকেটের পাশাপাশি বরিশালের স্থানীয় পর্যায়ে পেঁয়াজের আবাদ এবং উৎপাদন কম হওয়ার বিষয়টির প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এরই ধারাবাহিকতায় বরিশাল বিভাগে পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সরকারিভাবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকেই পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে বরিশালের ১০ উপজেলাসহ বিভাগের ৬ জেলায়। পাশাপাশি আর্থিক প্রণোদনা এবং প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত কৃষকদের দিয়ে কার্যক্রম চলছে পেঁয়াজ ও মশলা জাতীয় কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির।

গতবছরের রবি মৌসুম থেকেই এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, পেঁয়াজ চাষে উপযুক্ত মাটির অভাব রয়েছে বরিশালে। বহুবার চেষ্টার পরেও কাঙ্খিত ফসল না পাওয়ায় পেঁয়াজ চাষে অনেকটাই অনাগ্রহী স্থানীয় কৃষকরা।

তবে সরকারি প্রণোদনা এবং প্রকল্পের মাধ্যমে বরিশালে পেঁয়াজ উৎপাদনে চাষীদের উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তারা কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, বীজ ও উপকরণ সরবরাহ করছেন। পাশাপাশি ফসল চাষে মাঠ নির্ধারণেও কাজ করছেন তারা। সূত্র জানায়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বরিশাল অঞ্চলে পেঁয়াজের আবাদ এবং উৎপাদন অনেকটাই কম। এমনকি পার্শ্ববর্তী জেলা ফরিদপুরে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তার অর্ধেকও হয়না বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা মিলিয়েও। এসব কারণ বিবেচনায় অন্তত ১৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে বরিশালে পেঁয়াজ চাষ এবং উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের আওতায় গড়ে তোলা হচ্ছে দক্ষ চাষী। আর এর ফলে বরিশালে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।

বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ২০১৯ সালের রবি মৌসুমে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ১ হাজার ১০৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। তবে নানা প্রতিবন্ধকতা এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হয়নি। সেবছর ১০ উপজেলার আবাদ মিলিয়ে কেবলমাত্র ১২৮ হেক্টর জমির ফলন পাওয়া গিয়েছিল পেঁয়াজের।

তবে চলতি বছর বরিশালের ১০ উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। যা পূরণে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শষ্য) তৌফিকুল ইসলাম জানান, পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত মাটি প্রয়োজন। তবে বরিশাল অঞ্চলে এমন মাটির অভাব রয়েছে। তাছাড়া পেঁয়াজ চাষে কম আগ্রহী বরিশাল অঞ্চলের কৃষকরা। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভাগের ৬ জেলায় পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আর্থিক প্রণোদনা ছাড়াও বেশ কয়েকটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত কৃষকদের দিয়ে পেঁয়াজ ও মশলা জাতীয় কৃষিপণ্য উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রম চলছে।

তিনি বলেন, গত বছর নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এবছরও অতিবর্ষণ, ক্ষেতে জোয়ারের পানি উঠে জলাবদ্ধতাসহ আবহাওয়া প্রতিকূল ছিল অনেকটাই। এছাড়া মাঠে এখনও ধানের আবাদ রয়েছে। তবে সব প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে ১০ উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের যে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা পূরণ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এই কর্মকর্তা।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech