অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার খবরে ভ্যাকিসন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল জানিয়েছে, বাংলাদেশ যথাসময়েই কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন পাবে।
ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনাভাইরাসের টিকাটি ভারতে উৎপাদনের দায়িত্ব পেয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট।ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশি অংশীদার বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল।
বেক্সিমকোর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা গতকাল সোমবার গণমাধ্যমেক বলেন, আমরা যা বুঝতে পারছি তা হলো, টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার ওই বিবৃতিটি সর্বজনীন। আমরা বিশ্বাস করি যে, আমরা অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছি এবং যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাব।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনের ভারতীয় সংস্করণ ‘কোভিশিল্ড’ চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া পর এটির তিন কোটি ডোজ সংগ্রহের জন্য গত ৫ নভেম্বর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে সরকার।
রবিবার ভারতের ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড এবং ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের দিয়েছে।
কিন্তু, সেদিনই বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদার পুনাওয়ালা বলেছেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিনটি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু, তারা শর্ত দিয়েছে যে দেশটিতে ঝুঁকিতে রয়েছেন এমন জনগোষ্ঠীর জন্যে ভ্যাকসিন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সেরাম ইনস্টিটিউট তা রপ্তানি করতে পাবে না। খোলা বাজারে ভ্যাকসিন বিক্রি না করার শর্তও দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে আমরা শুধু ভারত সরকারকে ভ্যাকসিন দেবো।
বেক্সিমকোর সিওও রাব্বুর রেজা বলেন, বেক্সিমকো ও সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে করা চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে যে, স্থানীয় অনুমোদনের পর (বাংলাদেশ অনুমোদন দিলে) সেরাম ইনস্টিটিউট এক মাসের মধ্যেই প্রথম ধাপের ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে।
ভারতের ভালো প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাব বলে আশা করছি।
ভারত কর্তৃক ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর বেক্সিমকো সেরামের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি না, জানতে চাইলে রাব্বুর রেজা বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা সেরামের যাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, তারা জানিয়েছেন যে, তারা এখনো সরকার কিংবা সেরামের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরনের নির্দেশনা পাননি।
এদিকে, করোনার টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার খবরে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
গতকাল সোমবার বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কাছ থেকেই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পারি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এরপর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে তারা এ ব্যাপারে কিছু জানে না। কী হয়েছে তারা জানার চেষ্টা করছে। আমরা এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ভারত যদি নিষেধাজ্ঞা দেয়ও, তাহলেও তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের যে উষ্ণ সম্পর্ক তাতে আমাদের টিকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না।