বাউফল প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর বাউফলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস একুশে ফ্রেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শহীদ মিনার শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, হামলা পাল্টা হামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ দুপক্ষের অর্ধশতাধিক নেতা কর্মী আহত হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, স্হানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশ প্রশাসনের বক্তব্যে জানাযায় একুশে ফ্রেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে আগে পরে ফুল দেয়া নিয়ে বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের সভাপতি দশম জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ ও পটুয়াখালী ০২ আসনের সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ সমর্থিত গ্রুপের সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক অংশ সমর্থিত পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাউফল পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল অনুসারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাথে শহীদ মিনার চত্বরে ধাক্কাধাক্কি ও হুড়োহুড়ির ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ দুপক্ষকে শান্ত করে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করার ব্যবস্হা করে। তবে মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল সমর্থিত গ্রুপের শ্রদ্ধা নিবেদনের ফুলের চাক কে বা কারা রাতে ভেঙ্গে ফেলে দেয়। শ্রদ্ধা নিবেদনের ফুলের চাক ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে আজ সন্ধ্যায় মেয়র জুয়েল সমর্থিত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান হাসান সাধারণ সম্পাদক জামশেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিবাদ মিছিল
ছাত্রলীগ অফিস থেকে বের হয়ে উপজেলা চত্বর হয়ে পাবলিক মাঠের কাছাকাছি আসলে নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ সমর্থিত পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফারুকের নেতাকর্মীরা মিছিলের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ।আকস্মিক হামলায় মেয়র সমর্থিত ছাত্রলীগ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এসময় ইউসুফ রানা নামে এক ছাত্রলীগ নেতা আহত হয়। তবে তাৎক্ষনিক ভাবে মেয়র গ্রুপ সংগঠিত হয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে সাংসদ ফিরোজ গ্রুপের উপর ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। পাল্টাপাল্টি দুপক্ষের ইট বৃস্টিতে নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক, জেলা পরিষদ সদস্য সাংবাদিক হারুন অর রশীদ, ছাত্রলীগ নেতা ইউসুফ রানা, মেহেদী হাসান, রেজাসহ কমপক্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুপক্ষকে সরিয়ে দিয়েছে। আহতদের মধ্যে চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক কে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরন করা হয়েছে। গুরুতর আহত ছাত্রলীগ নেতা ইউসুফকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে এবং বাকিদের বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শহরের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, উপজেলা জুয়ে দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি প্রস্তুতির খবর পাওয়া গেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে, শহর জুড়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বাউফল পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল বলেন ছাত্রলীগের প্রতিবাদ মিছিল চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক তার ছেলে সৌমিক ফারুক সহ সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আহত করেছেন। নিজেদের ছোড়া ইটের আঘাত তিনি আহত হয়েছেন আমাদের কোন নেতাকর্মী তাদের উপর হামলা চালায়নি। তিনি আরো বলেন ইব্রাহিম অতীতে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে জড়িত ছিল তিনি সব সময় বাউফলকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এ ব্যাপারে জানতে সাবেক চীফ হুইপ ও পটুয়াখালী ০২ আসনের সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ এর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংসদ সমর্থিত একাংশের সাধারন সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার জানান মেয়র জুয়েলের লোক আমাদের নেতাদের কর্মীদের উপর হামলা নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক, জেলা পরিষদ সদস্য হারুন রশীদ সহ ২৫ জনকে আহত করেছেন। উল্লেখ গত বছর বাউফলে আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরিন কোন্দলে যুবলীগ নেতা তাপস, রুমান তালুকদার ও ইসাত তালুকদার নিহত হয়েছেন। দুপক্ষের মধ্যে বিভিন্ন ঘটনায় দুই শতাধিক মামলা চলমান রয়েছে।