ঝালকাঠি সদরের গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একে এম জাকির হোসেনকে কোপানোর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এজাহারভুক্ত একজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৯ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান।
তিনি জানান, হামলাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশ তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
এর আগে গত শুক্রবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় কয়েক দফা কুপিয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, গাবখান-ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের গেলো দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও চলমান নির্বাচনে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী একে এম জাকির হোসেনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা।
আহতের ছেলে মিনহাজুল ইসলাম তপু বাংলানিউজকে জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বাবা একে এম জাকির হোসেনের সঙ্গে তিনি ও তার ছোটভাই মাজহারুল ইসলাম তৌকিসহ আত্মীয় স্বজন ও কর্মীরা মিলে নির্বাচনী প্রচারণার কাজে বাড়ি থেকে বের হন।
বাড়ির সামনে গাবখান ব্রিজের ঢালে তারা দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় হামলাকারীরা দেশীয় ধারলো অস্ত্র নিয়ে সেখানে আসে।
এসময় হামলাকারীরা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ মাসুমের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার কারণ জানতে চায় এবং বাবা একে এম জাকির হোসেনেরে পায়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।
রক্তাক্ত অবস্থায় বাবা বাড়ির ভেতর চলে যায়। পরে সেখান থেকে সাংবাদিকদের সহায়তায় বাবাকে হাসপাতালে নেয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে যাওয়ার সময় পুনরায় আমাদের ওপর হামলা চালায়।
এসময় বাবার মাথায় দুটি, পিঠে একটি ও হাতের আঙুলে ১টি কোপ লাগে, সেসঙ্গে হাতের হাড়েও আঘাত লাগে। পরে বাবাকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের উদ্দেশ্যে নিয়ে রওয়ানা হলে দুর্বৃত্তরা সেখানেও হামলা চালানোর হুমকি দেয়।
এ কারণে পুলিশকে বিষয়টি জানিয়ে তাদের সহায়তায় বাবাকে পরবর্তীতে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
মিনহাজুল ইসলাম তপু জানান, এদিকে ওই হামলার সময় তিনি ও তার ছোটভাই মাজহারুল ইসলাম তৌকি, চাচাতো ভাই রাজু, ফুপাতো ভাই খলিলকেও কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়।
এর মধ্যে কলেজপড়ুয়া মাজহারুল ইসলাম তৌকির কানে কুপিয়ে আঘাত করা হয়। যাদেরকেও পরবর্তীতে শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তপু বলেন, হামলার ঘটনার পর তার মা রুবি আক্তার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। যেখানে লিয়াকত আলী খান, রাজু, পলাশ, রাহাতসহ ১০ জন নামধারী ও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
গত ২৮ মার্চ অভিযোগটি মামলা হিসেবে থানায় রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। আর এ ঘটনায় লাবলু নামে এজাহারনামীয় একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
তবে, আমরা চাই মূল হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক, কারণ তারা নানানভাবে আমাদের লোকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছোট ছেলে আহত মাজহারুল ইসলাম তৌকি জানান, তার বাবা জনগণের ভালোবাসা পেয়েই গাবখান-ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের পরপর দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।
তিনি এবারেও চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন এবং আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। তিনি কখনো সংঘাতের রাজনীতি করনেনি।
হামলাকারীরা বাবাকে এমনভাবে কুপিয়েছে যে প্রচুর রক্তক্ষরণে বাবার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছিলো। এ হামলার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান কলেজছাত্র তৌকি।