পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্র এলাকায় করোনা নিয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা তদারকি করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন কলাপাড়া উপজলো নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক।
সোমবার (০৫ এপ্রিল) রাতে কুয়াকাটা পৌরসভার চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় ইউএনওকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হয়েছেন তার গাড়ি চালক মো. আফজাল হোসেন (৩৮) এবং দেহরক্ষী সঞ্জয় দাস (২৯)।
ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র এলাকায় বিকেল থেকে কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ ও উপজলো প্রশাসন যৌথভাবে করোনা সচেতনতায় প্রচার কার্যক্রম চালাচ্ছিল। আমরা রাত ৮টায় মাস্ক পরা নিয়ে সচেতন করছিলাম বিচে ও জিরো পয়েন্টে। এসময় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ১০/১২ জন বাস কাউন্টারে আড্ডা দিচ্ছিলেন। আমরা সেখানে গেলে তারা দৌড়ে পালানোর সময় আমরা ইলিয়াস শেখসহ কয়েকজনকে থামিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলি। এসময় তাদের মধ্যে কয়েকজন নিজেদের তালাশ টিমের লোক বলে দাবি করলে আমরা তাদের কাছে কার্ড দেখতে চাই। কিন্তু তারা কার্ড দেখাতে পারেননি। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। তার মধ্যে ইলিয়াস শেখ নামে ওই ব্যক্তি আমাদের কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসব কাজ কেন করা হচ্ছে, এতে কোনো লাভ নেই জনগণের, এ রকম নানা কথা তিনি বলতে থাকেন। এ পরিস্থিতিতে আমি ইলিয়াস শেখকে আটক করার চেষ্টা করলে তিনি দৌড়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পরই ইলিয়াস শেখের নেতৃত্বে বাচ্চু শেখ, হানিফ, হাসিবসহ পাশের বস্তির ৭০/৮০ জন লোক এসে আমার ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালাতে গেলে টুরিস্ট পুলিশ লাঠিচার্জ করে। একপর্যায়ে তারা আমার সরকারি গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে মারেন। এমন পরিস্থিতিতে আমাকে স্পট থেকে সরাতে এগিয়ে গেলে তারা আমার গাড়িচালক মো. আফজাল হোসেন (৩৮) এবং দেহরক্ষি সঞ্জয় দাসের (২৯) ওপর হামলা করেন। এতে তারা আহত হন। পরে আমরা স্পষ্ট থেকে সরে এসে মহিপুর থানা পুলিশকে জানালে, তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার এ ঘটনায় অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বলেন, আমি উদ্ভূত পরিস্থিতির খবর শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, ইউএনও’র সঙ্গে বেশ কিছু লোক বিতর্ক করছেন। আমিসহ কয়েকজন তাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।
স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা গেছে, হামলার নেতৃত্বদানকারী ইলিয়াস শেখ হলেন কুয়াকাটা ক্যামেরাম্যান সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক।
পরে এ বিষয়ে ইলিয়াস শেখ সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার দোষ স্বীকার করে লিখিত বক্তব্য দেন।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।