বঙ্গোপসাগরে ডলফিন ও শুশুকের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। একের পর এক সৈকতে ভেসে আসছে মৃত ডলফিন। এবছর মোট ২২টি বিভিন্ন প্রজাতির মৃত ডলফিন সৈকতে ভেসে আসে। এসব প্রাণীর মরদেহ সৈকত থেকে উদ্ধার হওয়ায় উৎকণ্ঠা বাড়ছে সচেতন মহলে।
সর্বশেষ বুধবার সকাল ৯টার দিকে কুয়াকাটার সৈকতে আবারও ভেসে এসেছে ৭ ফুট দৈর্ঘ্যের শুশুক প্রজাতির একটি মৃত ডলফিন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, গভীর সমুদ্রে নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিতের অভাবে জেলেদের জালে আটকে পড়ে এবং জাহাজের সাথে ধাক্কা খেয়ে মারা পড়ছে বিরল প্রজাতির এসব সামুদ্রিক প্রাণী।
জেলে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে মৃত একটি ডলফিন সাগরে ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে তীরে আসে। সৈকতের ঝাউবাগান পয়েন্টে এটিকে দেখতে পায় স্থানীয়রা। ডলফিনটির শরীরের মাথা ও লেজে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে তাদের ধারণা, এটি গভীর সমুদ্রে জেলেদের জালে কিংবা ট্রলারের সাথে আঘাত পেয়ে মারা যেতে পারে। খবর পেয়ে ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা বিষয়টি মৎস্য বিভাগ ও বন বিভাগকে জানিয়েছেন।
ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, চলতি বছরে গত দুই মাসে ১৬টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে। জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মোট ২২টি মৃত ডলফিন কুয়াকাটার ১৮ কিলোমিটার সৈকতের বিভিন্ন স্থানে ভেসে এসেছে। এগুলোকে স্থানীয়ভাবে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। দিন দিন সামুদ্রিক বন্ধু প্রাণী ডলফিনের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এতে সামুদ্রিক পরিবেশের চরম ক্ষতি হচ্ছে। তবে ডলফিনের মৃত্যুর সঠিক কারণ খুঁজে বের করে জীববৈচিত্র্য রক্ষা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা নাহলে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটতে পারে-এমনটাই দাবি করেছেন তিনি।
ইউএসএআইডি ওয়ার্ল্ড ফিস বাংলাদেশে ইকোফিস-২ সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, ডলফিনগুলো মারা যাওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। যেমন গভীর সমুদ্রে ট্রলারের ধাক্কায় ও জেলেদের জালে পেঁচিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ডলফিনের মৃত্যু হতে পারে। তবে এর আগে ভেসে আসা মৃত ডলফিনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ডলফিন মারা যাওয়ার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা যাবে।
পটুয়াখালী জেলা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক তারিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাস্থলে বিট কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। এ ডলফিনের নমুনা সংগ্রহ শেষে মাটিচাপা দেওয়া হবে।