কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং জেলে কার্ড পাইয়ে দেয়ার নামে হাজার হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে গোলাম মাওলা নামের এক ব্যক্তির বিরেদ্ধে। এ ঘটনায় উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে প্রভাবশালী এক ইউপি সদস্যের ঘনিষ্ট ব্যক্তি হওয়ায় গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছে ভুক্তভোগীরা।
একাধিক ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অভিযুক্ত গোলাম মাওলা দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার সাধারন মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাতা সুবিধা পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জনপ্রতি ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। এভাবে ওই এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষের কাছ থেকে তিনি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া যাদের বয়স হয়নি তাদের কাছ থেকেও তিনি টাকা নিয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, ইউপি সদস্য জগৎ জীবন রায়ের সাথে তার সখ্যতা রয়েছে। ফলে তার দোহাই দিয়েই মূলত টাকা আত্মসাত করে আসছেন তিনি।
ভুক্তভোগী দৌলতপুর এলাকার বাসিন্দা মমিন ফরাজীর অভিযোগ, মেম্বার চেয়ারম্যানরা এ গ্রামে তেমন একটা আসেননা। তার বয়স না হওয়া সত্ত্বেও গোলাম মাওলাকে বয়স্ক ভাতা পাওয়ার জন্য ৪ শ’ টাকা দিয়েছেন। অপর এক বাসিন্দা হাফেজ সাইদুল হক জানান, প্রায় দুই বছর আগে গোলাম মাওলা তার বোন ফরিদা বেগমকে বিধবা ভাতা পাইয়ে দিবে বলে তার কাছ থেকে দুই হাজার ৫ শ’ টাকা নিয়েছেন। পরে ভাতার তালিকায় নাম লেখাতে না পেরে তিন চার কিস্তিতে দুই হাজার টাকা ফেরত দেন মাওলা। এবছর আবার তার কাছ থেকে তিনশ টাকা নিয়েছেন। সলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা সাহিদা বেগম জানান, তার মায়ের বয়স্ক ভাতা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে এক বছর আগে দুই হাজার টাকা নেন গোলাম মাওলা। কয়েকদিন আগে তার মা মারা গেছেন। কিন্তু মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার মায়ের ভাগ্যে জোটেনি বয়স্ক ভাতার কার্ড। নীলগঞ্জ আবসনের বাসিন্দা মমতাজ বেগম জানান, আমার শাশুরী হাজেরা খাতুন অন্ধ মানুষ দৌতপুর গ্রামে ভিক্ষা করতেন বয়স্ক ভাতার তিন হাজার টাকা উত্তোলন করে ১৫’শত টাকা গোলাম মাওলা নিয়ে যান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোলাম মাওলা বলেন, তিন চারজনের কাছ থেকে তিনশ টাকা করে নিয়ে নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামপুলিশ আনসার মোল্লাকে দিয়েছি। কারও কাছ থেকে ২ হাজার বা ৩ হাজার টাকা নেইনি। তবে আনসার মোল্লা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।
৪ নংওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জগৎ জীবন রায় বলেন, ওই ওয়ার্ডের সকল জনগনই আমার। তবে গোলাম মাওলার পিতা ওহাব কারীকে সম্মান শ্রদ্ধা করতাম। গোলাম মাওলার সাথে আমার কোন সর্ম্পৃক্ততা নেই।
কলাপাড়া উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি বা আমাদের কেউ কিছু জানায়নি। তবে বিষয়টি এখন শুনলাম। তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।