এম এ কুদ্দুস, দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
দুমকির লেবুখালীতে নির্মিত পায়রা-লেবুখালী সেতুতে বেশকিছু বিশ্বমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে সেতুর ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে আগেভাগেই অবগত হওয়ার পাশাপাশি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হবে। একই সঙ্গে কোনো কিছুর ধাক্কা থেকে রক্ষায় পিলারের পাশে নিরাপত্তা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এতে সেতুর স্থায়িত্ব বাড়বে বলে মনে করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সাম্প্রতিক সময় পদ্মা সেতুর পিলারের সঙ্গে বার বার ফেরি ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে এই সেতুর দুটি পিলারে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ জন্য পিলারের পাশে স্টিলের কাঠামো দিয়ে প্রটেকশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে এই প্রথম কোনো সেতুতে হেলথ মনিটরিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে বজ্রপাত ও ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা ওভার লোডেড যানবাহন চলাচলে সেতুর ভাইব্রেশন সিস্টেমে কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে সে বিষয়ে এই সিস্টেম ওয়ার্নিং দেবে। এটি দেশের দ্বিতীয় সেতু যা এক্সট্রা জোট ক্যাবল সিস্টেমে তৈরি করা হয়েছে। ফলে নদীর মাঝে একটি এবং দুপাড়ে দুটি পিলারের ওপর মূল সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে। বড় আকারের তিনটি পিলারের সঙ্গে দুপাশে মোট ১২টি করে ক্যাবল সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে করে মোট ৩৬টি ক্যাবল ব্যবহার করা হয়েছে। যেহেতু নদীর মধ্যে একটি মাত্র পিলার স্থাপন করা হয়েছে সেহেতু নদীর গতিপথ কিংবা প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে না।এটি বাংলাদেশের সব থেকে বড় স্প্যান বিশিষ্ট সেতু। যার দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার করে। এতে পদ্মা সেতুর থেকেও বেশি বড় স্প্যান সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া পদ্মায় ১২০ মিটার পাইল করা হলেও এই সেতুতে ১৩০ মিটার পালই করা হয়েছে। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লনজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছে। ১৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯.৭৬ মিটার প্রস্থের সেতুটি ক্যাবল দিয়ে দুপাশে সংযুক্ত করা হয়েছে। ২০১৬ সালে লেবুখালী-পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট, ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ বিনিয়োগে মূল সেতুর নির্মাণ করেন। বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশনের সভাপতি ও দুমকি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ হাওলাদার, দুমকি উপজেলা নির্বাহি অফিসার শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ ও সেতু প্রকল্প পরিচালক মোঃ আব্দুল হালিম সেতু গতকাল পরিদর্শন করেন এবং বলেন দুমকি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ হাওলাদার বলেন,পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক চাকাকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য অর্থনৈতিক লাইফ লাইন হিসেবে কাজ করবে পায়রা-লেবুখালী সেতু। এ ধারাবাহিকতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই অক্টোবর মাসেই সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিবেন। এ কারণে সেতুটি এখন যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ।