৩৬০ জন চেয়ারম্যানসহ ১৬শ’ প্রার্থী বিনা ভোটে জয়ী হওয়া নিয়ে একদিকে যেমন জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, অন্যদিকে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর এমন জয়ই প্রমাণ করে, ভেঙে পড়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা। আর এই ধরনের ঘটনা গণতন্ত্রের কাঠামোবিরোধী বলে মনে করেন খোদ নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্যও।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার সংখ্যা বলছে তৃণমূলের জমজমাট নির্বাচন উৎসবের চিত্র এখন শুধুই স্মৃতি। কিছুদিন আগে ষষ্ঠ ধাপের তফশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগের পাঁচ ধাপেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন সব মিলিয়ে এক হাজার ৬০০ জন। চেয়ারম্যান পদে ভোট ছাড়াই বিজয়ী ৩৬০ জন। এর মধ্যে একজন ছাড়া সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত। আর কোনও প্রার্থী না থাকলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করতে কোনো আইনি বাধা নেই। তবু এভাবে বিপুল সংখ্যক জনপ্রতিনিধি বিনাভোটে নির্বাচিত হওয়ায় দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এত বিপুল সংখ্যক প্রার্থী জয়ী হওয়া দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার প্রমাণ- যার দায় নিতে হবে সরকারকেই।
এদিকে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াকে উৎসাহিত করা সমীচীন নয় বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে দেশে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনলে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে কিনা তা নতুন করে ভাবতে হবে। আগামীতে যারা দায়িত্বে আসবেন নির্বাচন কমিশনে তারা নিশ্চই এই বিষয়গুলো ভেবে দেখবেন। আসন্ন নির্বাচনগুলোকে সু্ষ্ঠু করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সবকিছু করা হবে বলে জানান তিনি।
এ পর্যন্ত পাঁচটি ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩৬০ জন, সাধারণ সদস্যপদে ৮৫৮ এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৩৬৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় বিজয়ী হয়েছেন। আগামী ৩১শে জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপে আরও ২১৯টি ইউপির ভোট অনুষ্ঠিত হবে।