বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ৩৯

অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ৩৯

ঝালকাঠিতে এমভি অভিযান-১০ যাত্রীবাহী লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ জনে। দগ্ধ হয়েছেন শতাধিক যাত্রী। নিখোঁজ রয়েছেন একই পরিবারের চার সদস্যসহ অনেকেই। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী লঞ্চটি রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে থাকাবস্থায় ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ওই কক্ষটির নিচ থেকে আগুনের লেলিহান শিখা এবং ধোঁয়া চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে লঞ্চটির মধ্যে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।

এসময় নিচ থেকে শুরু করে তিনতলার যাত্রীরা দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। কেউ কেউ বাঁচার তাগিদে নদীতে ঝাঁপ দেন। এমনকি শরীরে আগুন নিয়ে একাধিক যাত্রীকে নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখেছেন অন্য যাত্রীরা। আগুন নিয়ে লঞ্চটি নদীর তীরের দিয়াকুল গ্রামে নোঙ্গর করে। এসময় এলাকাবাসী এবং ছোট ছোট নৌযান সাহায্যে এগিয়ে আসে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ভোর ৫টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট আগুন নেভানোসহ উদ্ধার কাজ করছে। লঞ্চটির ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

উদ্ধার যাত্রীরা জানান, ইঞ্জিনরুম থেকে লাগা আগুন মুহুর্তেই পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন থেকে বাঁচতে অনেক যাত্রীই লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। লঞ্চটিতে প্রায় পাঁচ শতাধিক যাত্রী ছিল বলেও জানান উদ্ধার হওয়ারা।

৭০ জন যাত্রীকে বরিশাল-শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলেও আশঙ্কাজনক থাকা ৯০ ভাগ দগ্ধ ৩ জনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন থাকা যাত্রীদের বেশিরভাগ ৫ থেকে ১০ ভাগ দগ্ধ হওয়ায় সকলে শঙ্কামুক্ত বলে দাবি করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের এখানে দগ্ধ ৬৭ জন ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে অনেক মহিলা ও শিশুও আছে। ৩ জনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তাদের। এদের চিকিৎসায় ৫০ জনের চিকিৎসক দল কাজ করছেন। এছাড়া ঢাকা থেকেও একটি টিম পাঠানো হচ্ছে। পর্যাপ্ত নার্সও এখানে রয়েছেন।

আগত এক যাত্রী বলেন, ঘুমিয়ে ছিলাম, উঠে দেখলাম ইঞ্জিন দিয়ে আগুন জ্বলে। তারপর আগুন আর আগুন। আমি মনে করেছিলাম বাঁচবো না।

আহত আরও যাত্রী জানান, আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। উপরে উঠে গিয়ে দেখি আগুন আর গরম। উপায় না পেয়ে নদীতে লাফ দেই।

নিজের পরিবারের লোকজনের খোঁজে থাকা এক ব্যক্তি বলেন, আমার ওয়াইফের নাম তাসলিমা, আমরা দুই মেয়ে তানিশা ও মীম, ছেলে জুনায়েদ কাউকে পাচ্ছিনা।

এদিকে, লঞ্চ কর্তৃপক্ষের গাফিলতির বিষয়টি তদন্তে বেরিয়ে আসলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস।

অন্যদিকে, এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএ এবং জেলা প্রশাসনের দু’টি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব তোফায়েল আমেদকে আহ্বায়ক করে সাত সদস‍্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়। এছাড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল আলমকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech