পিরোজপুরের কাউখালীতে স্বামী হত্যা মামলায় স্ত্রী সালমা আক্তারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। পিরোজপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ এসএম নুরুল ইসলাম মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার বারবাকপুর গ্রামের আব্দুল মোফাজ্জেল শিকদারের ছেলে আব্দুল মান্নানের সাথে কাউখালী উপজেলার মুক্তারকাঠী গ্রামের সালমার বিয়ে হয়। প্রথম দিকে সালমা তার শ্বশুরবাড়ি থাকলেও তার উচ্ছৃঙ্খল আচরণের প্রতিবাদ হওয়ায় স্বামী আব্দুল মান্নানকে নিয়ে কাউখালী বাবার বাড়িতে চলে আসেন। সেখানে থাকাকালীন সে একই উপজেলার নাঙ্গুলী গ্রামের লিটু হাওলাদারের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।
২০১৩ সালের ১৮ জুলাই রাত ১১টার দিকে রিতার স্বামী ঘুমিয়ে পড়লে লিটু সালমাকে দরজা খুলে দিতে বলে। পরে লিটু ঘরে ঢুকে রিতার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এসময় তার স্বামী বিষয়টি দেখে ফেললে তারা বিষয়টি গোপন রাখার জন্য লোহার রড দিয়ে আব্দুল মান্নানকে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে মারা যায় মান্নান। পরে তারা মান্নানের গলায় রশি লাগিয়ে সেটিকে আত্মহত্যা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করে।
ওই রাতেই সালমার ভাই রিয়াজ ফোনে আব্দুল মান্নানের ভাই মো. হান্নান শিকদারকে জানায় তার ভাই অসুস্থ হয়েছেন। সকালে তারা এসে আ. মান্নানকে মৃত দেখলে পুলিশকে জানান। পরে এ ঘটনায় পিরোজপুরের কাউখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি আদালতে গেলে বিচারকার্য শেষে পিরোজপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ এসএম নুরুল ইসলাম এ রায় দেন।
রায়ে বলা হয় মামলার ১ নম্বর আসামি রিতার বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। অন্য আসামির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।