পবিপ্রবি প্রতিনিধি ॥ দেশে প্রথমবারের মত দেশীয় পুষ্টিগুণে ভরপুর বৈচি ফলের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) গবেষক। বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় হেকেপ প্রকল্পের অর্থায়নে ২০১০ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মাহবুব রব্বানী বৈচি ফল নিয়ে গবেষণা করে আসছিলেন। অবশেষে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর নতুন এই জাত উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছেন। গত ২৩ অক্টোবর জাতীয় বীজ বোর্ড নতুন উদ্ভাবিত এই ফলকে পিএসটিইউ বৈচি-১ জাত হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।
দীর্ঘ আট বছরের গবেষণায় দেখা যায় ডাইওসিয়াস প্রকৃতির স্ত্রী গাছ নিয়মিত ফলধারী এবং দেশের সর্বত্র চাষ উপযোগী; একক ফলের ওজন ১.৫ – ২.০ গ্রাম, গড় মিষ্টতা (৯-১০শতাংশ), ফলের শাঁস নরম ও সাদাটে বর্ণের; গাছ জলাবদ্ধতা অসহনশীল, ফ্রেবুয়ারি-মার্চ মাসে ফুল আসে এবং মে-জুন মাসে ফল পরিপক্ক হয় এবং হেক্টর প্রতি বছরে ৩-৪ টন ফল উৎপাদন করা সম্ভব। এ বছর জাতীয় বীজ বোর্ডে বৈচির নতুন জাতের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেন তিনি। বুধবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় বীজ বোর্ড ওই ফলকে পিএসটিইউ বৈচি-১ জাত হিসেবে অনুমোদন দেয়।
ক্যারটিনয়েড, টিএসএস, ভিটামিন সি, আয়রন এবং অন্যান্যে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বৈচি খুব অল্প খরচে জোড় কলম পদ্ধতিতে বংশবৃদ্ধি করা যায় এবং রোপণের ৩ বছরের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা সম্ভব। এ ছাড়াও বীজ থেকে উৎপাদিত গাছ সবুজ বেষ্টনী তৈরিতে ব্যবহার করা যায়।
নতুন এ জাত সম্পর্কে প্রফেসর ড. মো. মাহবুব রব্বানী জানান, জলবায়ু সহনশীল দেশীয় টেকসই ফলের গবেষণার ধারাবাহিকতায় বিলুপ্তপ্রায় বৈচির নতুন জাত উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছি। নতুন এ জাত পবিপ্রবি তথা সারা দেশের সম্পদ।
এ ছাড়াও তিনি বলেন, ‘সহজলভ্য বংশ বিস্তার, চাষাবাদ কৌশল প্রস্তুতকরণ, কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈচি ফলকে উপকূলীয় এলাকা তথা সারা দেশে সম্প্রসারণের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, কৃষি বিজ্ঞানী ও গবেষক প্রফেসর ড. মো. মাহবুব রব্বানী ইতোমধ্যে আটটি উপকূলীয় বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় ফলের জাত উদ্ভাবন করেছেন।