বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

কোরবানীর পশুতে আমতলীর হাট সয়লাব, বিক্রি কম, ছোট গরুর চাহিদা ও দাম বেশী

কোরবানীর পশুতে আমতলীর হাট সয়লাব, বিক্রি কম, ছোট গরুর চাহিদা ও দাম বেশী

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
সরকারীর নির্দেশনা উপক্ষো করে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে জমে উঠেছে আমতলীর পশুর হাট। হাটে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় ক্রেতা-বিক্রেতা ও পুলিশ প্রশাসনের কেউ মাস্ক পরিধান করেছেন না। এতে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। ঈদ-উল আযহা আর মাত্র তিন দিন বাকী। দেশীয় কোরবানীর পশুকে আমতলী গরুর হাট সয়লাব হয়ে গেছে। বুধবার আমতলী গরুর হাটে কোরবানী উপযোগী গরু ক্রয়-বিক্রয় কম হয়েছে। ছোট গরুর চাহিদা ও দাম বেশী ছিল।
আমতলী প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানাগেছে, আমতলী উপজেলায় ৭ হাজার ৮’শ ২৫ টি কোরবানীর পশুর চাহিদার বিপরীতে উপজেলার ২২১ টি খামারে ৮ হাজার ২১৬ টি পশু রয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৯৩৮ টি গরু, ৫৫১ টি মহিষ ও ২২৭৮ টি ছাগল। এ বছর কোরবানীর চাহিদা মিটিয়ে ৩’শ ৯১ টি পশু উদ্ধৃত্ত্ব থাকবে বলে ধারনা করছেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আমিনুর ইসলাম। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ গরুর হাট আমতলী। সপ্তাহে প্রতি বুধবার হাট বসে। হাটে দেশীয় প্রজাতির অন্তত ৭ হাজার গরু আসে। দেশের কুষ্টিয়া, ঝিনাইদাহ, যশোর, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, লক্ষীপুর ও শিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে অন্তত দের শতাধিক পাইকারী ক্রেতা আসেন এ হাটে। এ বছর উত্তরাঞ্চলের বড় ব্যবসায়ীরা কোরবানী উপযোগী গরু ক্রয় করছেন না। তারা লালন পালনের জন্য ছোট গরু ক্রয় করছেন। ফলে কোরবানী উপযোগী গরুর চেয়ে ছোট গরুর দাম তুলনামুলক অনেক বেশী। বুধবার বিকেল চারটা পর্যন্ত আমতলীর গরুর হাটে এক হাজার পাচ’শ গরু বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ছোট ধরনের এক হাজার চার’শ গরু এবং কোরবানী উপযোগী এক’শ গরু বিক্রি হয়েছে বলে জানান আমতলী গরুর হাট পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান।
বুধবার আমতলী গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ কেউ মাস্ক পরিধান করেনি। সবাই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ক্রয়-বিক্রয় করছেন। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন চোখে পড়ার মত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। কোরবারীর গরুর দাম সহনশীল অবস্থানে ছিল। তুলনামুলক ভাবে হাটে ছোট গরুর চাহিদা ও দাম অনেক বেশী। কোরবানীর গরু বিক্রি ও দাম কিছুটা কম।
চুনাখালী গ্রামের আবু ছালেহ বলেন, হাটে বড় ধরনের একটি গরু এনেছি। দাম চেয়েছিলাম ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা কিন্তু ক্রেতারা দাম বলেছ মাত্র ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। দাম কম বলায় বিক্রি করেনি। বরগুনা রায়েরতবক গ্রামের মাস্টার জামাল মিয়া বলেন, দুইটি গরু এনেছি। কিন্তু কোন ক্রেতা এখনো পাইনি। তিনি আরো বলেন, বড় ধরনের গরুর ক্রেতা পাওয়া খুবই কষ্টকর।
বরগুনা আয়লা পাতাকাটা গ্রামের গরু বিক্রেতা রাজিব মিয়া বলেন, হাটে ক্রেতা অনেক কিন্তু গরু কিনছেন না তারা। তারা দাম বলে ঁেহটে যাচ্ছেন।
আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের জাকির মোল্লা বলেন, এক লক্ষ বিশ হাজার টাকায় দুইটি গরু বিক্রি করেছি। গত সপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে হাটে দাম কিছুটা কম।
হামেদ মৃধা বলেন, মাঝারী ধরনের একটি গরু ৭৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। তুলনামুলক ভাবে দাম ঠিক আছে। বেশীও না কমও না।
তালতলীর চন্দনতলা গ্রামের শাহিন ফকির বলেন, ছোট সাইজের ছয়টি গরু এনেছিলাম। সব গরু বিক্রি করেছি। তিনি আরো বলেন, উত্তরাঞ্চলের বড় গরু ব্যবসায়ীরা গরু কিনে নিয়ে গেছে। ভালো দামে বিক্রি করেছি।
পটুয়াখালী থেকে আসা ব্যবসায়ী মোঃ সাইফুল বলেন, বড় ধরনের পাঁচটি গরুর মধ্যে একটি গরু ৯২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।
বাবুল হাওলাদার, জয়নুল মুসুল্লী, দেলোয়ার খলিফা, বাবুল হাওলাদার, নিজাম পাহলান, জালাল গাজী ও দুলাল মিয়ার বলেন, হাটে ক্রেতা অনেক কিন্তু কেউ গরু কিনছেন না। সবাই দাম বলে চলে যাচ্ছেন। তারা আরো বলেন, হাটে ছোট গরুর চাহিদা অনেক বেশী।
কলাপাড়ার বড় পাইকারী ব্যবসায়ী মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, দাম বেশী হলেও এখন পর্যন্ত ছোট ধরনের ৩০টি গরু ক্রয় করেছি। পারলে আরো কিছু কিনবো।
নোয়াখালীর বড় গরু ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল আলী বলেন, ইতিমধ্যে ছোট ধরনের ১৫ টি গরু ক্রয় করেছি। আরো ক্রয় করবো। ছোট গরুর দাম বেশী হলেও নোয়াখালীতে চাহিদা অনেক।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, কোরবানী উপলক্ষে পশুর বাজারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে পশু ক্রয়-বিক্রয় করে গন্তব্যে পৌছতে পারে। তিনি আরো বলেন, জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিনসহ সাদা পোশাকে পুলিশ হাটে কাজ করছে।
আমতলী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আমিনুর ইসলাম বলেন, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশী। মোটাতাজাকরন ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পশু পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিম রয়েছে। তিনি আরো বলেন, কোন রোগাক্রান্ত পশু যাতে বিক্রি না হয় সে বিষয়ে মেডিকেল টিম সদা প্রস্তুত আছে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech