স্বাস্থ্য ডেস্ক :
এখনকার দিনে মানুষের জীবনযাত্রার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। বেশিরভাগ মানুষই খুব কম বয়সের মধ্যে আক্রান্ত হচ্ছেন বিশেষ কিছু রোগে। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে।
সবার মধ্যেই সমস্যা দেখা দেয়া সম্ভব। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, পুরুষের মধ্যে সমস্যা নারীদের থেকে কিছুটা বেশি। এর কারণ অবশ্যই পুরুষের জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের ভুলভ্রান্তি। তাই অনেকটাই কম বয়সে এ সমস্যা বড় হয়ে দেখা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ৪০ পেরলেই শরীরে বাসা বাঁধছে গুরুতর কিছু রোগ। তাই প্রতিটি পুরুষকে এ সময়ে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে।
এ প্রসঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বারাসত সরকারি মেডিকেল কলেজের জনস্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অনির্বাণ দোলই বলেন, এখন পুরুষের মধ্যে অনেক রোগ দেখা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে বহু অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। এ অবস্থায় বয়স ৪০-এর দোড়গোড়ায় পৌঁছালেই সমস্যা হচ্ছে। তাই এ বয়স থেকেই সচেতনতা দরকার।
তিনি আরও জানান, এ সময় পুরুষের মধ্যে হার্টের সমস্যা, স্ট্রোক, প্রেশার, ইরেকটাইল ডিসফাংশন ইত্যাদি অসুখ গুরুতর আকার ধারণ করছে। পাশাপশি সুগার, প্রোস্টেটের সমস্যা তো রয়েছেই। এ সব রোগ কিন্তু শরীরের পক্ষে ভয়াবহ হয়ে যেতে পারে। তাই সতর্কতা জরুরি। এ বয়সে কয়েকটি টেস্ট করা জরুরি।
হার্টের জন্য
ডা. দোলইয়ের কথায়, এ সময়টায় বেড়েছে হার্টের রোগ। এক্ষেত্রে এ বয়সেই হার্টের রক্তবাহীনালীর ভেতর প্লাক জমে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বাড়ছে হার্ট অ্যাটাক। তাই এখন বয়স ৪০ পেরলেই বা তার আগে থেকেই বছরে একবার ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফি, চেস্ট এক্স রে, প্রয়োজনে ট্রেডমিল টেস্ট করা যেতে পারে। এ ছাড়াও চিকিৎসক বুঝলে আরও টেস্ট দিতে পারেন।
কোলেস্টেরল
এখন কোলেস্টেরল হলো শরীরে থাকা মোমজাতীয় পদার্থ। এ পদার্থ কিন্তু রক্তনালীর ভেতরে জমে। রক্তনালীর ভেতরে জমার কারণে সেই অংশে রক্ত চলাচল ঠিকমতো হয় না বা একবারে বন্ধ হয়ে যায়। এ সমস্যা থেকে বাঁচার জন্যই প্রতিনিয়ত করতে হবে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট। এক্ষেত্রে বছরে একবার টেস্ট করুন।
ডায়াবেটিস
আসলে অসংখ্য মানুষ এখন এ রোগে আক্রান্ত। বিশেষত, টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেকটাই। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এ রোগটি নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে এ অসুখ থাকলে কিডনি, চোখ, স্নায়ুসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের গুরুতর ক্ষতি হয়। তাই প্রতিটি পুরুষ মানুষকে করতে ডায়াবেটিস টেস্ট। বছরে অন্তত একবার করুন। এক্ষেত্রে ফাস্টিং ব্লাড সুগার, পিপি সুগার, এইচবিএ১ সি টেস্ট দিতে পারেন চিকিৎসক।
প্রেশার
ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের মতোই এ রোগটিও ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে বলে জানালেন ডা. দোলই। এ অসুখটিরও প্রথম থেকেই চিকিৎসা দরকার। তাই এ রোগটির পরীক্ষা করুন। এখন বছরে একবার টেস্ট হলো মাস্ট। আর প্রেশার উপররে দিকে থাকলে প্রতিমাসে টেস্ট করতে হবে। একটু এদিক-ওদিক বুঝলেই আপনাকে ওষুধ খেতে হবে।
ভিটামিন ডি
ডা. দোলইয়ের কথায়, পুরুষের মধ্যে আর্থ্রাইটিস বাড়ছে। এবার এ আর্থ্রাইটিসের কারণে অনেক সমস্যাই দেখা দিতে পারে। তাই করতে হবে ভিটামিন ডি-এর পরীক্ষা। এ ভিটামিনের অভাব ঘটলে হাড়ের পাশাপাশি, লিভার ও হার্টের সমস্যারও কারণে হতে পারে।
এ ছাড়াও করতে হবে ক্রিয়েটিনিন, সোডিয়াম-পটাশিয়ামসহ বিভিন্ন টেস্ট। তবেই ভালো থাকতে পারবেন। অন্যথায় সমস্যা বাড়বে ছাড়া কমবে না।