হেলথ ডেস্ক :
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) শনিবার মাঙ্কিপক্স নিয়ে ‘গ্লোবাল হেলথ ইমার্জেন্সি’ বা জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সারা বিশ্বে এ রোগের বিস্তার ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটি। সতর্কতা জারির পর বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনতে পারে সংস্থাটি।
সারা বিশ্বে মাঙ্কিপক্স নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। এ পর্যন্ত ৭৫টি দেশে এ রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও হানা দিয়েছে মাঙ্কিপক্স। তাই বাংলাদেশেও যেকোনো সময় হানা দিতে পারে এ রোগটি।
মাঙ্কি পক্স নিয়ে জরুরি অবস্থা জারির অর্থ হলো নতুন এ রোগটি যেন মহামারি আকারে বিস্তার ঘটাতে না পারে, তার জন্য সম্মিলিতভাবে আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়ায় বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া।
তবে হু-র এই জরুরি অবস্থা জারির কারণে কোনো দেশের ওপর আলাদা করে নীতি আরোপের নির্দেশ থাকছে না। বরং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ ঘোষণার মাধ্যমে সব দেশকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে এবং আগামী দিনগুলোতে এই রোগটির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নীতি তৈরির বিষয়ে জোর দিচ্ছে।
সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজারেরও বেশি মাঙ্কিপক্সের রোগী পাওয়া গেছে। এসব রোগীর মধ্যে শুধু আফ্রিকায় ৫ জন মৃত্যুবরণ করেছে।
ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের বক্তব্য অনুযায়ী, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীর বেশির ভাগই দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠে।
নতুন এ রোগটির উপসর্গ অন্য সব পক্সের মতোই। শুরুতে ব্রণ আর ফোসকার মতো গোটা দেখা দেয়, যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ৪০ বছরের কম বয়সী পুরুষরাই বেশি আক্রান্ত হয়েছে এই রোগে। এই রোগ গর্ভবতী নারী ও দুর্বলদের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
তাই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ভাইরাস সম্পর্কে সবাইকে বিস্তারিত জানতে আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। কীভাবে মাঙ্কিপক্স ছড়াচ্ছে তা চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়েও জোর দিয়েছে সংস্থাটি। এ ছাড়া ভাইরাসটির বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিভাইরাল ভ্যাকসিন গ্রহণের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
যদিও এখন পর্যন্ত এ রোগটি নিয়ে উদ্বেগের বিশেষ কারণ নেই। তবে হু-র তথ্যানুযায়ী জুনের শেষ থেকে জুলাইয়ের শুরু পর্যন্ত সংক্রমণের সংখ্যা ৭৭ শতাংশ বেড়েছে। যার কারণে রোগটি নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে শুরু করেছে বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ রোধ করতে না পারলে, এ রোগের মিউটেশন হতে থাকবে। আর তখনই রোগটি মারাত্মক আকার নেয়ার সুযোগ পাবে। এতে রোগী মারা না গেলেও তার দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই রোগটির সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সর্বসাধারণকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানিয়েছে।