বিনোদন ডেস্ক :
শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল। এর আদি বংশধর ভারতীয় উপমহাদেশে। শ্রীলংকারও জাতীয় ফুল শাপলা। পানির ওপর ফুটে থাকা শাপলা ফুলের নজরকাড়া সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। আর বর্ষা শরতে খালে বিলে ফোটে থাকা শাপলা প্রকৃতিতে এক অপরুপ যৌন্দর্যের সৃষ্ঠি করে।
একদা বর্ষা মৌসুমে দেশের ডোবা-নালা, খাল-বিল, পুকুর রাস্তার দু’পাশের মুক্ত জলাশয়ে ব্যাপকভাবে শাপলার মনোরম দৃশ্য দেখা যেত। বর্ষা থেকে শরতের শেষ পর্যন্ত এসব জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মাত প্রচুর শাপলা-শালুক। সব বয়সের মানুষ রং-বেরঙের শাপলা দেখে মুগ্ধ হতেন। শরতে আবহমান বাংলার খালে বিলে অপরুপ সৌন্দর্যের প্রতীক এই শাপলা। কিন্তু এখন আর সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না।কালের বিবর্তনে জলাশয় শেষ হতে বসেছে আর হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের এই জাতীয় ফুল।
এই শাপলা ফুটেছে লোক বসতির বাইরে শ্রীবরর্দী উপজেলার বয়শা বিলে। কেউ কেউ বিলটিকে পদ্মাবিল বললেও এর সরকারি নাম বইশা বিল। শ্রীবরর্দী পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের শেখদি মহল্লার মহিলা কলেজের পিছনে এই বিল অবস্থিত। জেলা প্রশাসনের নামে (ইজারা দেওয়া) এই বিলে অন্তত ত্রিশ একর জায়গা ছাড়াও বিস্তর বিল জুড়ে স্থান করে নিয়েছে শাপলা। ফুটতে শুরু করেছে ফুল। স্মিগ্ধ টলটলে পানিতে শাপলার সমারোহ এই ঋতুর এক নান্দনিক সৃষ্ঠির বার্তা দিচ্ছে। বর্ষা থেকে শরতের শেষ পর্যন্ত জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবেই এই পুষ্পবৃক্ষ পরিবারের জলজ উদ্ভিদ শাপলা-শালুক জন্মায়। শরতের শুরুতেই বিশাল পদ্মাবিলে ফুটবে শাপলা ফুল। বিলটি শাপলার রঙে রঙিন হবে। ফুলের পরে হবে ভ্যাট (স্থানীয় নাম)। পরিপূর্ণ হলে স্থানীয়রা ভ্যাট সংগ্রহ করে ভ্যাটের খই করেন। অনেকেই শালুক তুলে সিদ্ধ করে বাজারে বিক্রি করেন। শালুক ভিটামিন যুক্ত খাবার। আসন্ন শারদীয় দূর্গা পূজা জুরে বিক্রি হবে শাপলা গাছে ডাটা। এই ডাটা সনাতন ধর্মের লোকেরা নিরামিশ রান্না হিসেবে খায়। শরতের শেষে শুকনা পদ্মাবিলে ভ্যাট থেকে পরিপূর্ণ বীজ পড়বে জমিতে। আবার বর্ষা শুরু হলেই ওই বীজ থেকে গজাবে হাজারও শাপলা গাছ। কদিন পরেই সব বয়সের মানুষ রং-বেরঙের শাপলা তুলতে যাবে। শাপলা তুলতে বেশি আনন্দ পায় শিশুরা।
স্থানীয়রা বলছে আগে থেকেই এই বিলে শাপলা জন্মায়। শাপলা জন্মানোর স্থানে মানুষজনের যাওয়া আসা অনেকটা কঠিন বলে নির্জন প্রকৃতি তার আনন্দেই পরিস্ফুটিত হয়। তবে কয়েক বছর ধরে কষ্ট করে হলেও কিছু প্রকৃতি প্রেমী মানুষ এই সময়ে শাপলা দেখতে আসে।বিলে কদিন পরে মাছ ধরবে ইজারাদার। মাছ ধরার সময় অধিকাংশ শাপলা তুলে ফেলা হবে।
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফ আক্তার বলেছেন, পদ্মাবিলের শাপলার কথা তিনি শুনেছেন এবং একবার গিয়েছিলেন। কিন্ত তখন পর্যন্ত ফুল ফুটেনি। জায়গাটি সরকারি সেহেতু সরকার থেকেই এর রক্ষণাবেক্ষন করা হবে। সীমিত আকারে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে কেউ যেন শাপলা গাছের ক্ষতি না করে এমন একটি ব্যবস্থা করা হবে।