বাউফল:
পটুয়াখালী জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নির্দেশনায় বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগ এবং পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েল আয়োজিত পাল্টাপাল্টি সম্মেলন আহবান করায় বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন নিয়ে তৈরী হয় ব্যাপক নাটকীয়তা। নিয়মানুযায়ী উপজেলা আওয়ামীলীগ কর্তৃক সম্মেলন আযোজন করার কথা থাকলেও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কর্তৃক পাল্টা সম্মেলন আয়োজন করা নিয়ে দিনভর সাধারন মানুষের মধ্যে চলতে থাকে নানা জল্পনা কল্পনা। কোন সম্মেলনে আসছেন জেলা নেতৃবৃন্দ কিংবা কোনো কমিটি বৈধতা পাবে আর কোন কমিটি অবৈধ। এদিকে পাল্টাপাল্টি সম্মেলন আয়োজন করা নিয়ে ২৭ নভেম্বর পাল্টাপাল্টি সাংবাদিক সম্মেলন করে একে অপরকে দোষারোপ করে বক্তব্য প্রদান করেন সাংসদ আসম ফিরোজ ও পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল।
বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত কাউন্সিল স্থলে সকাল ৯টা থেকেই আসতে শুরু করেন দলীয় নেতা কর্মীরা। প্রায় ২৫হাজার নেতা কর্মী জড়ো হয় উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত ওই সম্মেলন স্থলে। হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত হলেও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাধারন সম্পাদকের না আসার গুঞ্জন শুরু হলে নেতা কর্মীদের মাঝে তৈরী হয় উদ্বিগ্নতা।
এরপর সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে দুপুর ১টার দিকে বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত সম্মেলনে উপস্থিত হন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান মিয়া ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক কাজী আলমগীর হোসেনসহ জেলা আওয়ামীলীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনে আসা নিয়ে শঙ্কা এবং বিলম্বের কারনে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের তোপের মুখে পরেন জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দরা। পরে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক উপস্থিত আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের কাছে সম্মেলনে আসা নিয়ে শঙ্কা এবং কাল বিলম্বের কারন ব্যাখ্যা করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আসম ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া এমপি বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার বাউফল পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফারুক সহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। পরে দ্বিতীয় অধিবেশনে উপস্থিত কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে বাউফল উপজেলা বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে আসম ফিরোজ এবং এবং সাধারন সম্পাদক হিসেবে আবদুল মোতালেব হাওলাদার এবং ১নং সহ সভাপতি হিসেবে জেলা আওয়ামীরীগের ত্রান ও সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক রায়হান সাকিবের নাম ঘোষনা করেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাভোকেট শাহজাহান মিয়া এমপি।
অপরদিকে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েল আয়োজিত সম্মেলনের উদ্বোধক হিসেবে জিয়াউল হক জুয়েলের নাম থাকলেও সম্মেলনে উপস্থিত হননি তিনি। এছাড়াও জেলা আওয়ামীলীগের কোনো নেতৃবৃন্দ সম্মেরনে যাননি। জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য বাউফল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে উক্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন শেষে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি/ সম্পাদকের স্বাক্ষর/ অনুমোদন ছাড়াই জসীম ফরায়েজীকে সভাপতি এবং জাহাঙ্গীর উল্লাহকে সাধারন সম্পাদক হিসেবে নাম ঘোষনা করা হয়।
সর্বশেষ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন উত্তর মতবিনিময় সভায় সাংসদ আসম ফিরোজ সাংবাদিকদের জানান, বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিমের নির্দেশে। জেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিতিতে সম্মেলনে উপস্থিত কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি উপহার দিয়েছেন। উপস্থিত সাংবাদিকরা এসময়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কর্তৃক সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করলে তিনি বলেন সংগঠনের সংবিধানের বাইরে গিয়ে কাউন্সিল হয় না বড়জোর তাকে পিকনিকি বলা যেতে পারে। এসময়ে সংগঠন পরিপন্থী হিসেবে কাজ করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে জেলা কমিটিকে অবহিত করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাবেন বলে জানান তিনি।##
এম.এ হান্নান