স্পোর্টস ডেস্ক :
দিনের শুরুটাও কাটে ম্যাড়ম্যাড়ে। বড় স্কোরের আশায় থাকা বাংলাদেশকে মাত্র ৪৫ মিনিটেই অলআউট করে আফগানিস্তান। তবে সেই হতাশা পুষিয়ে দিয়েছেন বোলাররা। ইবাদত হোসেন-শরিফুল ইসলামদের বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি অতিথিরা। পেস আক্রমণ দিয়ে আফগানিস্তানকে দেড়শর নিচে অলআউট করেছে লিটন দাসের দল।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৩৯ ওভারে স্কোরবোর্ডে রান ১৪৬ তুলেছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশ লিড পেয়েছে ২৩৬ রানের। বাংলাদেশ চাইলে ফলোঅনে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে পারত আফগানিস্তানকে। তবে সেটা করেনি স্বাগতিকরা। অতিথিদের দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে না পাঠিয়ে নিজেরাই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে বাংলাদেশ।
অবশ্য দিনের শুরুতে ব্যাট হাতে আজকের শুরুটা ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ-আফগানিস্তান একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। যেখানে সবাই অপেক্ষায় ছিল বড় সংগ্রহের, সেখানে আগের দিনের ৩৬২ রানের সঙ্গে মাত্র ২০ রান যোগ করে অলআউট হয় বাংলাদেশ। পেস বিষে একাই ধসিয়ে দেন নিজাত মাসুদ। ৩৮২ রানে আলআউট হয়ে থামে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
তবে বল হাতে নিজেদের ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা আফগানিস্তানকে থিতু হয়ে দেয়নি বাংলাদেশ। বোলিংয়ের শুরুতেই আঘাত হানেন শরিফুল ইসলাম। আফগান ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকে (৬) উইকেটের পেছনে অধিনায়ক লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান শরিফুল ইসলাম।
পরের ওভারে ইবাদত হোসেনের বল কাট করেন আবদুল মালিক (১৭)। স্লিপে থাকা জাকির হাসান সামনে ডাইভ দিয়ে লুফে নেন ক্যাচ। বাংলাদেশ পায় দ্বিতীয় উইকেটের দেখা। নবম ওভারে ইবাদতের বলে স্লিপের ফাঁক গলে দুটো বল ছুটে যায়।
তবে, তৃতীয় সাফল্যটাও এনে দেন ইবাদত। তাঁর ডেলিভারিতে ব্যাট বলের মেলবন্ধন ঘটেনি রহমত শাহর। ব্যাটের মাঝখানে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করেন তাসকিন আহমেদ।
লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার আগে তিন উইকেট হারিয়ে আফগানরা সংগ্রহ করে মাত্র ৩৫ রান। সেখান থেকে দ্বিতীয় সেশনে অতিথিদের আরও চেপে ধরে বাংলাদেশ। লাঞ্চ থেকে ফেরার পরই শরিফুলের আঘাত। তরুণ পেসারের বলে হাশমতউল্লাহ শাহিদিকে দুর্দান্ত ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৬ বলে ৯ রানে থামে তাঁর প্রতিরোধ।
মাঝে প্রতিরোধ গড়েন আফসার জাজাই ও নাসির জামাল। পঞ্চাশ রানের এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান মিরাজ। বাংলাদেশি অফস্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের পিচ করে ঢুকা টার্নিং ডেলিভারি আঘাত হানে জামালের প্যাডে। সঙ্গে সঙ্গে আবেদন তোলেন মিরাজ। আউট দিতে ভুল করেননি জামাল। তবে রক্ষা হয়নি জামালের, ৪৩ বলে ৩৫ রান করে ফিরতে হয় সাজঘরে।
থিতু হওয়া আরেক ব্যাটার আফসারকে থামান ইবাদত। তাঁর করা বল মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন আফসার। সেখানে থাকা ফিল্ডার শরিফুল ক্যাচ নিতে ভুল করলেন না। ৪০ বলে ৩৬ রান করে থামেন আফসার। এরপরের দৃশ্যপটেও ইবাদত। এবার ইবাদতের বলে মুমিনুলের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হন আমির হামজা। দুই পেসারের উইকেট উৎসবে যোগ দেন তাইজুলও। তিনি এসে বিদায় করেন ইয়ামিনকে। দ্রুত উইকেত হারানোর চাপ সামলে আর উঠতে পারেনি আফগানরা। মাত্র ১৪৬ রানেই থেমে যায় অতিথিদের প্রথম ইনিংস।
বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে ৪৭ রান দিয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন ইবাদত। সমান দুটি করে নেন শরিফুল, মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম।