স্পোর্টস ডেস্ক :
বাংলাদেশের ম্যাচটাকে যদি একটা ছবি ধরা হয়, সেই ছবিটাকে ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখতে চাইবে প্রত্যেক ফুটবলপ্রেমি। রাত পোহালে ঈদ। এরচেয়ে ভালো ঈদ উপহার দেশের মানুষকে কি দিতে পারতেন ফুটবলাররা?
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৩ এ আজ বুধবার (২৮ জুন) ভূটানের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। ভূটানকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ে ১৪ বছর আর পাঁচ আসর পর সাফের সেমিফাইনালে উঠল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে দর্শক খুব বেশি নেই। অল্প কিছু দর্শক। হয়তো হাতে গুণেই বলে দেওয়া যাবে। কিন্তু, অল্প ক’জনের ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ চিৎকার ভালোই শোনা যাচ্ছিল। সেই অল্প কিছু দর্শক নিজেদের ভাগ্যবান ভাবতেই পারেন। বাংলাদেশ ফুটবল দল এতটা চমৎকার ফুটবল খেলেছে— বহুদিন মনে রাখার মতো।
‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে সমীকরণ ছিল ড্র করলেই সেমিফাইনাল। একটু বিলাসিতার সুযোগ ছিল। ন্যূনতম (০-১) গোলের ব্যবধানে হারলেও সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। তাতেই কিনা শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ম্যাচের ১১ মিনিটে শেলথ্রিম নামগিলের বক্সের বাইরে ফাঁকায় পেয়ে যাওয়া শট রক্ষা করতে পারেননি বাংলাদেশ গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। ১৭ মিনিটে নিমা ওয়াংড়ির দুরপাল্লার শট বার পোস্টে লাগলে বেঁচে যায় লাল-সবুজের দল।
গোল খেয়ে ছন্নছাড়া হয়ে গেলেও দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নেয় জামাল ভূঁইয়া-শেখ মোরসালিনরা। ২০ মিনিটে প্রথম গোল পায় বাংলাদেশ। ভূটানের বক্সের বাইরে রাকিবের বাড়ানো বলে বাঁ’পায়ের দারুন শটে সমতায় ফেরান মোরসালিন।
এই গোলের পর বাংলাদেশের খেলার ধরনটাই বদলে যায়। বেড়ে যায় খেলার গতি। ২৭ মিনিটে মোরসালিনের ক্রসে রাকিবের শট ভূটানের ডিফেন্ডার জিগমের গায়ে লেগে জালে জড়ায়। ম্যাচে প্রথমবার এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে ভূটানকে ব্যতিব্যস্ত রাখে মোরসালিন-রাকিব জুটি। ৩৩ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে মোরসালিনের বাড়ানো লম্বা পাসে ওয়ান অন ওয়ানে গোলরক্ষক পরাস্ত হলে বল অল্পের জন্য বারের পাশ দিয়ে যায়। এই ভুল শুধরে মিনিট দুয়েক পরই প্রতিদান দেন রাকিব। ডি বক্সের বাইরে থেকে সলো রানে বল একদম গোললাইন থেকে প্রায় জিরো ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে চমৎকার এক গোল করেন রাকিব। বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ৩-১ গোলে।
সুবিধাজনক স্থানে থেকে বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচের দখল নিজেদের দিকে রাখে। তবে, কাবরেরার শিষ্যরা একটু দেখেশুনে খেলে। নিজেদের রক্ষণ ঠিক রেখে কয়েকটি আক্রমণ করে বাংলাদেশ। যদিও, সেগুলো খুব ফলপ্রসু হয়নি।
ভূটান চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশের রক্ষণ ভাঙতে। কিন্তু, রহমত মিয়া ও তপু বর্মনদের টপকাতে পারেনি। শুরুর কিছু সময় ছাড়া মাঝমাঠের পুরো দখলটা বাংলাদেশেরই ছিল।
১৪ বছর পর সাফের সেমিফাইনালে ওঠা বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন কুয়েত।