ডেস্ক রিপোর্ট :
শীতকাল আসন্ন। ঠাণ্ডা মানেই শুধু যে সর্দি-কাশির আক্রমণ তা কিন্তু নয়। এসময়ে ঠাণ্ডা-কাশির সঙ্গে যোগ দেয় ডাস্ট এলার্জিও। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে রাস্তায় বেড়ে যায় ধুলাবালি। সেখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ে ডাস্ট এলার্জির জীবাণু।
ডাস্ট এলার্জি কেন হয়?
ধুলা-বালি শরীরে প্রবেশ করার পর আমাদের ইমিউন সিস্টেমে যদি হাইপারসেনসিটিভ রিঅ্যাকশান হয়, তাহলেই অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এসময় আমাদের শরীরে উপস্থিত শ্বেত রক্ত কণিকা ইমিউনোগ্লোবিউলিন.ই নামক অ্যান্টিবডির দ্বারা প্রভাবিত হয়। ফলে শরীরে বিশেষ অংশে প্রদাহ সৃষ্টি হতে শুরু করে। তখনই নানাবিধ অ্যালার্জির লক্ষণ প্রকাশ পায়।
ডাস্ট অ্যালার্জির লক্ষণ:
ডাস্ট অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হলে সাধারণত যে লক্ষণগুলো দেখা দেয়: বারবার হাঁচি দেওয়া, মাইগ্রেন এর সমস্যা বেড়ে যাওয়া, নাক থেকে পানি পড়া, চোখ, কান এবং ঠোঁট চুলকানো, জ্বর, বমি বমি ভাব, ডায়েরিয়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া এবং তলপেটে ব্যথা হওয়া।
আজকের এ প্রতিবেদনে এমন কিছু সহজ নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, যা মেনে চললে এ ধরনের অ্যালার্জি থেকে সহজেই দূরে থাকা সম্ভব হয়। সেই নিয়মগুলো হলো:
ঘর পরিষ্কার রাখুন:
আপনার ঘর যদি পরিষ্কার থাকে তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সেখানে ধুলো জমতে শুরু করবে। সেই ধুলার কারণে আপনার সঙ্গী হবে নানা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াসহ ডাস্ট এলার্জির মতো রোগ। তাই ডাস্ট অ্যালার্জি থেকে বাঁচতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মাথায় রাখবেন, যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তারা ভুলেও ঘর ঝাঁড়ু দেবেন না। ঘর ঝাঁড়ু দেওয়ার পরিবর্তে প্রতিদিন ঘর মুছবেন। তাহলে আর ধুলা-বালিও জমবে না। এটি করলে ঘর পরিষ্কারের সময় অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যাবে।
প্রতিদিন বিছানা পরিষ্কার করুন:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বিছানাতেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে অ্যালার্জির জীবাণুরা বাস করে। তাই অ্যার্লার্জির প্রকোপ থেকে বাঁচতে নিয়মিত বিছানার চাদর, বালিশের কভার এবং গায়ে দেওয়ার চাদর পরিষ্কার করা উচিত। নিয়মিত এগুলো পরিষ্কার করলে অ্যালার্জি জীবাণু থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
মাস্ক ব্যবহার করতে ভুলবেন না:
শীতকালে যখন বাড়ির বাইরে বের হবেন তখন অবশ্যই ফেস মাস্ক ব্যবহার করবেন। এটি আপনাকে ধুলা-বালি থেকে রক্ষা করবে। মাস্ক ব্যবহারের ফলে ধুলা-বালি নাকের ভেতরে প্রবেশ করার সুযোগ পাবে না। ফলে অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমবে। প্রসঙ্গত, ঘর পরিষ্কারের সময়ও মাস্ক ব্য়বহার করবেন। না হলে সেই সময়ও নাক দিয়ে ধুলাবলি আমাদের শরীরের ভেতরে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়ে যাবে।
ধূমপান থেকে দূরে থাকুন:
ধূমপান শুধু এলার্জিই নয়, ক্যানসারসহ আরও নানা জটিল রোগ সৃষ্টি করে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ডাস্ট অ্যালার্জি আছে, তারা যদি ঘন ঘন ধূমপান করেন, তাহলে অ্যালার্জির প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই ডাস্ট এলার্জি থেকে বেঁচে থাকতে অবশ্যই ধূমপান থেকে দূরে থাকতে হবে।
কুকুর-বিড়াল থেকে দূরে থাকুন:
কুকুর এবং বিড়ালের পশমে এমন কিছু অ্যালার্জির জীবাণু থাকে, যা ডাস্ট এলার্জির জীবাণুকেও প্রভাবিত করতে পারে। তাই শীতকালে কুকুর-বিড়ালসহ এ ধরনের পোষা প্রাণী থেকে দূরে থাকতে হবে।