ডেস্ক রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে নিয়োজিত থাকবেন ৮০২ জন্য নির্বাহী হাকিম (ম্যাজিস্ট্রেট)। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) নির্বাহী হাকিমদের নিয়োজিত করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
চিঠিটি পাঠিয়েছেন ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান।
গত ২১ নভেম্বর আসন্ন নির্বাচনে আড়াই হাজারের বেশি নির্বাহী হাকিম নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি। তবে সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনি কাজে এত সংখ্যক হাকিম নিয়োগ করা হলে, অন্যান্য কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। তাই, সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ইসি।
আগে প্রতি তিনটি ইউনিয়নের জন্য একজন, দুর্গম (পার্বত্য এলাকাসহ) ও দূরবর্তী দুটি ইউনিয়নের জন্য একজন; প্রতি পৌরসভার জন্য তিনজন, তবে বৃহৎ পৌরসভার ক্ষেত্রে চারজন, সিটি করপোরেশনের প্রতি চার থেকে পাঁচটি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য একজন, তবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় সর্বোচ্চ প্রতি তিন ওয়ার্ডের জন্য একজন নির্বাহী হাকিম নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কমিশন।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এখন অবশ্য প্রতি উপজেলায় একজন, তবে ১৫টি ইউনিয়নের (পৌরসভাসহ) বেশি হলে সেই উপজেলায় দুজন, জেলা সদরের ‘এ’ ক্যাটাগরির পৌরসভায় একজন; তবে ৯ ওয়ার্ডের বেশি হলে দুজন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৫ জন, চট্টগ্রাম সিটিতে ১০ জন, খুলনা সিটিতে ছয় জন, গাজীপুর সিটিতে চারজন, অন্যান্য সিটি করপোরেশনে তিনজন করে নির্বাহী হাকিম নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর আওতায় আচরণবিধি প্রতিপালনার্থে প্রত্যেক নির্বাচনি এলাকায় প্রয়োজনীয় নির্বাহী হাকিম নিয়োগ করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এ লক্ষ্যে ৩০০টি নির্বাচনি এলাকায় ২৮ নভেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাহী হাকিমরা দায়িত্ব পালন করবেন।’
ইসির চিঠিতে বলা, ‘স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বিভাগীয় কমিশনারের পরামর্শক্রমে জেলা হাকিমরা (জেলা প্রশাসক) ইসি নির্ধারিত সংখ্যার কম-বেশি করতে পারবেন। এ ছাড়া প্রত্যেক জেলায় জেলা হাকিমের অধীন এক থেকে দুজন নির্বাহী হাকিম অতিরিক্ত হিসেবে নিয়োজিত রাখতে হবে। যাতে জরুরি প্রয়োজনে যেকোনো স্থানে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘ভোটগ্রহণের কয়েকদিন পূর্ব থেকে ভোটগ্রহণের দুদিন পর পর্যন্ত অথবা কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে মোবাইল, স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে বিশেষ করে বিজিবি বা অনুরূপ বাহিনীর প্রতি টিম বা প্লাটুনের সঙ্গে নির্বাহী হাকিম নিয়োজিত করা হবে বিধায় ওই সময় আচরণবিধি প্রতিপালন সংক্রান্ত নির্বাহী হাকিমের সংখ্যা হ্রাস করার প্রয়োজন হবে। এ ছাড়া মোবাইল, স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে নির্বাহী হাকিম নিয়োগ ছাড়াও ভোটগ্রহণের কয়েকদিন পূর্ব থেকে ভোটগ্রহণের পর পর্যন্ত কিছু সংখ্যক নির্বাহী হাকিম নির্বাচনি এলাকায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজেও নিয়োজিত করার প্রয়োজন হবে।’
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)।