বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

উন্নয়নের মহাযজ্ঞে দক্ষিণাঞ্চল

উন্নয়নের মহাযজ্ঞে দক্ষিণাঞ্চল

সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটাকে আধুনিকায়ন, গভীর সমুদ্র বন্দর পায়রা, বরিশালে রেলপথ, পায়রায় নির্মাণাধীন তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের পর বরিশালবাসীর জন্য এবার বর্তমান সরকারের আরেকটি উন্নয়ন যোগ হয়েছে। বরিশাল নগরীর দ্বারপ্রাপ্ত গড়িয়ারপাড় থেকে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার চারলেন সড়ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর এই চারলেনের কাজ শেষ হলেই পাল্টে যাবে পুরো বরিশাল নগরীর রূপ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এ চারলেন সড়কটির কারণে নগরীতে কমে আসবে যানজট।

ইতোমধ্যে এই চারলেন সড়ক নির্মাণের জন্য বরিশাল সড়ক ও জনপদ বিভাগ জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের বরাবরে চিঠি প্রদান করেছেন। তবে চারলেন সড়কটি হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য বড় ধরনের ফুটপাত নির্মাণ, পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ও সড়ক পারাপারে জন্য ওভার ব্রিজ নির্মাণের কথা জানিয়েছেন সড়ক বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে এই ১১ কিলোমিটার সড়কের দুইপাশে সরকারী সম্পত্তি অবৈধ দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও মতামত দিয়েছে সড়ক বিভাগ।

জানা গেছে, এই ১১ কিলোমিটার সড়কের দুইপাশে সড়ক ও জনপদ বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রের্কডীয় সম্পত্তি রয়েছে। এসব সম্পত্তি এখন ভূমিদস্যুদের দখলে। এসব সরকারী সম্পত্তিতে এখন অবৈধ দখলকারীরা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করে বসবাসের পাশাপাশি ভাড়া দিয়ে আয় করছেন কোটি কোটি টাকা। সড়ক ও জনপদ বিভাগের দায়িত্বশীয় কর্মকর্তারা বলেন, সাগরদী আমতলা মোড় থেকে শহীদ আব্দুর রব সেরেনিয়াবাত সেতু পর্যন্ত বর্তমান সড়কটি সংকুচিত। এমনকি সাগরদী ব্রিজটিও সঙ্কুচিত ও বাঁকা। অন্যান্যস্থানের তুলনায় আমতলা মোড় থেকে শহীদ আব্দুর রব সেরেনিয়াত সেতু পর্যন্ত বেশি অর্থাৎ ১৩০ থেকে ১৬০ ফুট প্রশস্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে দুইপাশে পুরনো রেকর্ড থেকে অবৈধ স্থাপনা সরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সূত্রমতে, ৮০’র দশকে এই সড়কটি মহাসড়কে পরিণত হলে তৎকালীন সময় বাংলাদেশ সড়ক বিভাগ সাগরদী ব্রিজ ও সড়ক নির্মাণ করেন। ৮০’র দশকে এই সড়ক ও ব্রিজটি যেভাবে হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মহাসড়কে পরিণত হওয়ার পূর্বে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী অবৈধভাবে ভুয়া কাগজ তৈরি করে সরকারী সম্পত্তিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে রাখেন। আর এসব সম্পত্তি বাঁচানোর জন্য তৎকালীন সময় প্রভাব বিস্তার করে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের দিয়ে সাগরদীর ব্রিজটি বাঁকাভাবে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও প্রভাবশালীরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সাগরদী এলাকায় সড়ক ঘেঁষে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ও মন্দির স্থাপন করেছে। যাতে করে অবৈধভাবে স্থাপন করা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরাতে না হয়।

সড়ক ও জনপদ সূত্রে জানা গেছে, সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা, নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্র বন্দর পায়রা ও তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র, রেল সড়ক স্থাপনের পর এবার বর্তমান সরকার বরিশালবাসীর উন্নয়নে যোগ করেছে গড়িয়ারপাড় থেকে আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার চারলেন সড়ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত। ইতোমধ্যে চারলেন সড়ক স্থাপনে জমি অধিগ্রহণ, সড়ক নির্মাণে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। এতে সড়ক বিভাগ ১১ কিলোমিটার সড়কের দুইপাশে মোট ১৬০ ফুট চারলেন সড়ক নির্মাণ করবে। এ জন্য জমি অধিগ্রহণে ৪৭০ কোটি বরাদ্দ হয়েছে।

বরিশাল সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেষ্টায় সারাদেশ উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য পদ্মা সেতু, সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটাকে ঢেলে সাজানো, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ কাজ চলমান, পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন, সর্বপ্রথম বরিশালে রেলপথ স্থাপনসহ বড় বড় মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এবার চূড়ান্ত হয়েছে গড়িয়ারপাড় থেকে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু পর্যন্ত ১৩০ ফুট চওড়া ১১ কিলোমিটার ফোরলেন সড়ক নির্মাণ। একইসঙ্গে বাইপাস সড়ক।

সরকারী সম্পত্তি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, এসব স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য দখলদারকে অসংখ্যবার নোটিস প্রদান করা হয়েছে। কেউ যদি সড়কের সম্পত্তির মধ্যে নির্মাণকরা স্থাপনা সরিয়ে না ফেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ফোরলেনের বিষয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি সংশোধনের জন্য তাদের দেয়া হয়েছে। সংশোধন শেষে পুনরায় প্রস্তাবটি আসলে অধিগ্রহণের কাজ শেষ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech