বিনোদন ডেস্ক:
এফডিসিতে ক্যান্টিনের পাশেই শহীদ স্মৃতি কলেজের বিশাল গেইট। তার পাশের মাঠে শহীদ মিনার। সেখানে থেকে হেঁটে কড়ইতলা হয়ে এফডিসির প্রশাসনিক ভবনের সামনে যেতেই চোখে পড়ল শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে বসা। অনেকের হাতে প্লেকার্ড। তাতে লেখা ‘জামশেদ হত্যার বিচার চাই’!।
মিনিট পাঁচেক নিরব থাকতে দেখা গেল শিক্ষার্থীদের। হুট করে শ্লোগান দিয়ে উঠল তারা। শ্লোগানে শ্লোগানে ভারি করে তুলল এফডিসি। স্লোগানের ভাষা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’!
প্রথম দেখায় মনে হতে পারে বাস চাপায় রাজধানীতে শিক্ষার্থী নিহতের পর যে আন্দোলনটি হয়েছিলো সেটাই আবার শুরু হয়েছে। সড়কে নিরাপদে চলাচল নিশ্চিত করতে আবারও রাস্তায় কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা। এক চুলও মনে হবে না এটা কোনো সিনেমার শুটিং।
শিক্ষার্থীদের পাশেই চোখে পড়ল স্টেশনারি দোকান, অন্যদিকে মূল সড়ক। সেই সড়কে থমকে আছে লোকাল বাস। আন্দোলন-অবরোধে রাস্তায় লেগেছে লম্বা জ্যাম! রিক্সা, মাইক্রো, প্রাইভেটকার সারি সারি দাঁড়িয়ে। হঠাৎ করেই সেখানে কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। মাথায় পতাকা বেঁধে, স্কুল ড্রেসে তার সঙ্গে এলেন শান্ত খান।
শামীম আহমেদ রনি পরিচালিত ‘বিক্ষোভ’ ছবির শুটিং এটি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের ঘটনাকে উপজীব্য করেই নির্মিত হচ্ছে ‘বিক্ষোভ’। এতে মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন শান্ত খান ও কলকাতার শ্রাবন্তী।
শুটিংয়ে কথা হলো ছবিটির প্রধান সহকারী পরিচালক পূজন মজুমদারের সঙ্গে। তিনি তখন শ্রাবন্তী-শান্তকে দৃশ্য বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। দৃশ্যটি এমন- পরিচালক অ্যাকশন বলার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পোশাকে কয়েক দুর্বৃত্ত মুখে কালো কাপড় পরে এসে বাস ভাঙচুর শুরু করবে। তখনই দৌড়ে গিয়ে শ্রাবন্তী-শান্ত তাদের বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। পূজনের বলা শেষে দেখাও গেলো এমন দৃশ্য।
মুহূর্তের মধ্যে দুর্বৃত্তরা একটি বাসের গ্লাস ভেঙে পালিয়ে গেলো। পরিচালক রনি বললেন, ”আজ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দৃশ্যের শুটিং করছি। গল্প পুরোটা বলে দেওয়া হলে ছবির টুইস্ট নষ্ট হয়ে যাবে। ছবিতে আরও চমক রয়েছে। চেষ্টা করছি, এ ছবিতে অতিথি চরিত্রে ইলিয়াস কাঞ্চনকে নেওয়ার জন্য। কারণ, উনি যে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে লড়ছেন সেটাই আমাদের ছবির উপজীব্য, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’।”
শ্রাবন্তী পরের দৃশ্যের জন্য চিত্রনাট্য পড়ছিলেন। তখনই কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘এ ছবির সবচেয়ে বড় শক্তি গল্প। প্রথমবার একজন শিক্ষিকার চরিত্রে অভিনয় করছি। তাছাড়া এই ছবির উদ্দেশ্য জনগুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে এই ছবির গল্প। বাংলাদেশ-ভারত সব জায়গায় সড়ক দুর্ঘটনা হয়। এই দুর্ঘটনা প্রতিকারে যে আন্দোলন, তা নিয়েই ছবিটি।’
ছবিতে স্কুলশিক্ষিকার নাম আফ্রি। তার জীবনে অনেক কষ্ট এসেছে, কিন্তু থেমে থাকেননি। এগিয়ে গেছেন। লড়তে শিখেছেন।
বিক্ষোভ ছবির শুটিং প্রসঙ্গে সহকারী পরিচালক পূজন বলেন, এবার দ্বিতীয় লটের শুটিং হচ্ছে। অর্ধেকের মতো কাজ শেষ। ২১ জানুয়ারি রাতে শ্রাবন্তী কলকাতা ফিরে যাবেন। আবার আসবেন ২ ফেব্রুয়ারি। তখন টানা এক সপ্তাহ শুটিং করবেন। তারপর পুরো ছবির কাজ শেষ হবে। আগামী রোজার ঈদে ছবিটি দেশব্যাপী মুক্তি পাবে।
শান্ত খান ও শ্রাবন্তী ছাড়াও ছবিতে রজতাভ দত্ত, জয়দীপ ব্যানার্জি, সাদেক বাচ্চু, সাবেরি আলম, মারুফ, শ্রভশ্রী কর প্রমুখ অভিনয় করছেন।
ছবির মারপিট অংশের পরিচালক ছিলেন ‘সিংহাম’ খ্যাত রকি রাজেশ। এ ছবির মাধ্যমেই বাংলাদেশি কোনো ছবির গানে প্রথম পারফর্ম করছেন বলিউডের সানী।