বরিশালে এই প্রথম জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বৃহৎ পরিসরে শোকাবহ আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মৃত্যুবরণকারী সকল শহীদদের স্মরণে দোয়া ও বুলেটবিদ্ব হয়ে আহতদের উপস্থিতিতে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানস্থ এই অনুষ্ঠানে ৩০ হাজার লোকের সমাগম হয়। এখানে প্রধান অতিথি হয়ে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পনেরই আগস্টে হত্যাকান্ড থেকে বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে পার্বত্য শান্তিু বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক (মন্ত্রী পদ মর্যদা) বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ।
এসময় স্কুল-কলেজ, মুক্তিযোদ্বা,সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
বরিশাল জেলা জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমানের সভাপতিত্বে সভার প্রধান অতিথি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, পনেরই আগস্ট জাতির জন্য একটি কালো অধ্যায়। যারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, তারা এই দেশের স্বাধীনতা চায়নি। জাতির জনককে হত্যার মধ্যদিয়ে ঘাতকরা চেয়েছিল বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানাতে। যার ফলস্বরূপ একুশ বছরে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনতা বিরোধীদের বিভিন্ন সুযোগ দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই ঘটনায় জিয়াউর রহমান এবং ২১ই আগস্টের ঘটনায় খালেদা জিয়া জড়িত ছিলেন তাই এই স্মরণ সভার মাধ্যমে আমি ঐসব খুনিদের বিচারের জন্য সরকারের কাছে দাবী করছি।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দেশকে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। তবে স্বাধীনতা বিরোধী ও বিপদগামী কিছু সেনার হত্যাযজ্ঞের মধ্যদিয়ে সেই স্বপ্ন ভুলুন্ঠিত হয়েছে। এখন জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছেন। তার নিরলস চেষ্টায় আজ বিশে^র দরবারে বাংলাদেশ এবং এই জাতি বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে দাড়াতে পারছে।
আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ্ আরো বলেন খালেদা জিয়া তার মৃত্যু স্বামীর ট্রাষ্ট্রের টাকা আত্বসাৎ মেরে খাওয়ার জন্য জেলে সাজা ভোগ করছে।
অন্যদিকে আর বলে সরকার খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে সরকার তাকে আটক রাখে নাই আদালতের রায়ে সাজাভোগ করছে।
আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ্ আরো বলেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার তারা আমাদের ১৫ হাজারের বেশী নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছে আজ আমরা ক্ষমতায় আছি আমরা যদি চাই তাহলে বিরোধী দলের কেহ রাস্তা দিয়ে হাটতে পারবে না আমরা তা করি না।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নে দক্ষিণাঞ্চলের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে এবং এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নেতা-কর্মী ও জনতাকে সোচ্চার হতে বলেন।
তিনি আরো বলেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু পরিবার ও তার আপনজনদের হত্যা করে থেমে থাকেনি সেদিন ৪ঠা নভেম্বের জাতীয় ৪ নেতাকে জেলখানায় গিয়ে হত্যা করে যা পৃথিবীর কোন ইতিহাসে এমন নজির নেই।
স্মরণ সভা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হয়ে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন- পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এমপি, বরিশাল-৪ আসনের (জাপা)সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু, বরিশাল-৬ আসনের (জাপা) সংসদ সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রতনা আমিন, মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার মিরা, স্মরণ সভার মুখ্য আলোচক হয়ে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সাহান আরা বেগম,যখন তার স্মৃতিতে ১৫ই আগস্টের সেই রাতের ঘটনার বর্ণনা করছিলেন তখন স্মরনসভার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া হাজার মানুষের দু’ চোখে জল বেয়ে পড়তে দেখা যায় এসময় অনেকেই ফুফিয়ে কাদতে থাকে।
আরো বক্তব্য রাখেন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ,বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি এ্যাড. গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, সাধারন সম্পাদক এ্যাড.একেএম জাহাঙ্গীর হোসাইন,জেলা আওয়ামীলীগ সম্পাদক সাবেক এমপি এ্যাড. তালুকদার মোঃ ইউনুস, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ইয়ামিন চৌধুরী,বরিশাল রেঞ্জ উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বিপিপিএম (বার পিপিএম, নগর পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান পিপিএম (বার) বুলটবিদ্ব আহত ডাঃ খন্দকার জিল্লুর রহমান।
স্মরণ সভার পূর্বে ১৫ আগস্ট কালোরাতে বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে নিহতদের জন্য ও আহতদের জন্য বিশেষ দোয়া-মোনাজাত করা হয়।
এছাড়া নিহতদের স্মরণে দাড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন শেষে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
অন্যদিকে দলের রাজনৈতিক সাংগঠনিক চর্চা না থাকার কারনে স্মরণ সভায় অনুষ্ঠানে কর্মীরা বার বার শ্লোগান আর হাততালী দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিবেশ বার বার বিঘœ সৃষ্টি করে।