বরিশাল সরকারী বিএম কলেজে ফিরতে মরিয়া দূুর্নীতির বরপুত্র খ্যাত কলেজের সাবেক প্রধান সহকারী জামায়াত নেতা সাখাওয়াত। দূর্নীতি ও জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে সরকারি বি এম কলেজের প্রধান সহকারীর পদ থেকে বদলি হয়ে বরিশাল জেলা শিক্ষা অফিসে হিসাব রক্ষন কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে যোগদান করেন বর্তমানে সেখানে কর্মরত জামায়াত নেতা সাখাওয়াত হোসেন আবার বিএম কলেজের প্রধান সহকারী পদে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায় সরকারি বিএম কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিকুর রহমান শিকদার বর্তমানে চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করছে তার অনুপস্থিতির সুযোগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. গোলাম কিবরিয়ার সুপারিশ নিয়ে বর্তমানে ঢাকায় মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের জামায়াত সংশিষ্ট কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিএম কলেজে আসার জন্য জোড় তদবির করছেন সাখাওয়াত। একজন ছাত্রনেতার আগ্রহে কয়েকজন শিক্ষক নেতাকে ৫ লক্ষ টাকার চুক্তিতে উপাধ্যক্ষর সুপারিশ হাসিল করতে সক্ষম হয়েছেন। একটি সূত্র জানায় সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ডে জরিত থাকার অভিযোগে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের আলোকে ২০১৭ সালে তাকে বদলি করে শিক্ষা অধিদপ্তর। বরিশাল সরকারি বিএম কলেজে থাকাকালীন কোটি টাকা দূর্নীতি করে বরিশাল শহরে তিনটি বাড়ির মালিক বনে যাওয়া যায় সাখাওয়াত। ২০১৭ – ২০১৮ শিক্ষা বর্ষে বিএম কলেজ থেকে ভর্তি বাতিল করা ৫৮২ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি ফি ও ভর্তি বাতিলের জন্য কলেজ নির্ধারণ এক হাজার টাকা ফি মিলে ১১লক্ষ টাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের ফান্ডে জমা না দিয়ে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর স্বপন কুমার পাল ও তৎকালীন কয়েকজন শিক্ষক নেতার যোগসাজশে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেন সাখাওয়াত পরবর্তীতে ঐসব শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন কার্ডের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে ৩৩ লক্ষ টাকা দিতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। বি এম কলেজের কর্মরত থাকাকালীন সকল অধ্যক্ষের প্রিয়পাত্র ছিলেন সোনার ডিম পারা দূর্নীতির হাস সাখাওয়াত। পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া উপজেলার জনৈক আমজাদ হোসেনের পূত্র এক সময়ের শিবির নেতা সাখাওয়াত হোসেন যুদ্ধ অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগকারী নায়েবে আমির দোলোয়ার হোসেন সাঈদীর বিশেষ সুপারিশ এ ২০০৫ সালে অফিস সহকারী পদে সরকারী বরগুনা কলেজে চাকরী তে যোগদান করেন সাখাওয়াত হোসেন। সেখান থেকে ২০০৬ সালে জোট সরকারের শেষ দিকে বরগুনা হতে বদলি হয়ে সরকারী বি এম কলেজের অফিস সহকারী পদে যোগদান করেন। ২০১৪ সালে তিনি পদোন্নতি পেয়ে চাখার সরকারী ফজলুল হক কলেজের প্রধান সহকারী পদে যোগদান করলেও সরকারী বি এম কলেজের সরকারী কোয়াটার তদকালীন কলেজ প্রশাসন এর সহযোগিতায় নিজের দখলে রাখেন। দুর্নীতিতে সিদ্ধহস্ত এ জামায়াত নেতাকে বেশিদিন সরকারী ফজলুল হক কলেজে চাকরী করতে হয়নি। ফজলুল হক কলেজে চাকরিরত থাকা অবস্থায় তিনি নিয়মিত গভীর রাত পর্যন্ত বি এম কলেজে অফিস করতেন। এক পর্যায়ে ২০১৫ সালে তৎকালীন বি এম কলেজ অধ্যক্ষ সহ কয়েক জন শিক্ষক নেতার বিশেষ সহযোগিতায় কলেজ তহবিলের ৩ লক্ষ টাকা খরচ করে তাকে বি এম কলেজের প্রধান সহকারী পদে পদায়ন করাতে সক্ষম হন। বি এম কলেজে যোগদান করার পরে এক এর পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি, মাস্টার রোলের কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি সহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ডের মাধ্যমে নিজেকে বি এম কলেজের মালিক ভাবতে শুরু করেন। তার এ সব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারনে শিক্ষক কর্মচারী ও ছাত্র নেতাদের অভিযোগ এর পরিপ্রক্ষিতে সরকারের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক রিপোর্ট প্রদান করলে ২০১৭ সালে তাকে বদলি করে শিক্ষা অধিদপ্তর। এদিকে জামায়াত নেতা সাখাওয়াত হোসেন আবার বিএম কলেজে ফেরত আসছেন এমন খবরে বিস্ময় প্রকাশ করছেন প্রগতিশীল ধারার শিক্ষক ও ছাত্রনেতারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রনেতা জানান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন শত বছরের ঐতিহ্যবাহী অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুতিকাগার সরকারি বিএম কলেজ বর্তমানে বিএনপি জামায়াতের চারন ভূমিতে পরিনত হয়েছে। কিন্তু তারপর সাখাওয়াত হোসেনের মত একজন চিহ্নিত জামায়াত অনুসারী দূর্নীতিগ্রস্থ কর্মচারী বিএম কলেজে আবার ফিরে আসলে সেটা হবে সবার জন্য দুঃখজনক।