মোঃ শাহাজাদা হীরা:
বরিশালে জেলা প্রশাসনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজও বরিশাল নগরীতে মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত আছে। আজ ১৯ এপ্রিল রবিবার সকাল থেকে বরিশাল মহানগরীর চৌমাথা মোড়, নথুল্লাবাদ, কাশিপুর বাজার, বাংলা বাজার, আমতলার মোড়, সাগরদী, রুপাতলী, পুলিশ লাইন, কাউনিয়া, কাটপট্টি, বাজার রোড, লাইন রোড, ভাটিখানা, বিসিক নগরীর, নতুনবাজার ও ফলপট্টি এলাকায় জেলা প্রশাসন বরিশাল এর পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জনসমাগম করে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বরিশাল জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে ১২ টি দোকান এবং এক জম ব্যক্তিকে মোট ২৯ হাজার টাকা জরিমানা অাদায় করা হয়। নগরীর বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমানের নির্দেশনায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল মোঃ নাজমূল হুদা এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আতাউর রাব্বী। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি এ সময় বিভিন্ন টি-স্টল, মুদি দোকান ও এলাকার মোড়ে মোড়ে যেখানেই জনসমাগম দেখা গেছে তা ছত্রভঙ্গ করা হয় এবং নিরাপদ দূরত্বে চলার নির্দেশনা, মাক্স পরার নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে মাক্স বিতরণ করা হয়।
এসময় সবাইকে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয় এবং সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে জরুরি ঔষধ ব্যতীত সকল প্রকার দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। এসময় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনায় করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাজমূল হুদা। অভিযান পরিচালনাকালে নগরীর কাউনিয়া এলাকায় ইসমাইল ও জাহিদ লকডাউন অমান্য করে বিনা প্রয়োজনে বাইরে ঘোরাঘুরি করার অপরাধে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৫ (১) ধারা মোতাবেক ৫০০ টাকা করে মোট ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এসময় মোঃ রনি নামে এক ব্যক্তি মোবাইল কোর্টের কার্যকর ভিডিও করার অপরাধে একই আইনে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ইউনুস নামে এক ব্যক্তিকে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে জনসমাগম করে পণ্য বিক্রয় করায় অপরাধে একই আইনে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নতুনবাজার এলাকায় অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে জনসমাগম করায় ৩ দোকান কে মোট ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। চৌমাথা এলাকায় কয়েকটি অপ্রয়োজনীয় দোকান ইলেকট্রনিকস দোকান খোলা রেখে ব্যাপক জনসমাগম করায় ৩ টি দোকান কে একই আইনে ৭৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
কাঠপট্টি এলাকায় বারবার সতর্ক করার পর ও অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে ব্যাপক জনসমাগম করায় মামুনকে ৫ হাজাট টাকা ও ফোরকান কে ৮ হাজার টাকা একই আইনে জরিমানা করা হয়। অন্য একটি দোকানে অধিক জনসমাগম ছিল কিন্তু আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গেলে দোকান খোলা রেখে পালিয়ে যায়। তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় কিন্তু না আসায় বাজার কমিটির মৌখিক অনুরোধের প্রেক্ষিতে সিলগালা করা হয়।
এছাড়াও বেশ কয়েকটি স্পটে টিসিবির পণ্য বিক্রয়ে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইনে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হয়। অভিযানের পাশাপাশি সচেতনামূলক কার্যক্রম হিসেবে বেশ কয়েকটি স্থলে মাস্ক বিতরণ করা হয়।এসময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সহযোগিতা করেন র্যাব ৮ এর এএসপি মুকুর চাকমাসহ একটি টিম। অপরদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আতাউর রাব্বী এর নেতৃত্বে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে আড্ডাবাজি করে করোনার ঝুঁকি বৃদ্ধি করার দায়ে একজনকে দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারা মোতাবেক ৫০০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। অভিযান শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয় বলেন, জনগণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা এবং করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং এটিকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা রোধকল্পে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমান সদা সচেষ্ট এবং তাঁর নির্দেশনায় নিয়মিত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।