সেরা নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় কার্যকরী রেমডেসিভির ইনজেকশন মে মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে দেশের বাজারে পাওয়া যাবে। দেশের দুই-তিনটি প্রতিষ্ঠান ১০ থেকে ১২ মে’র মধ্যে রেমডেসিভির বাজারে নিয়ে আসতে পারবে বলে জানিয়েছে।
রেমডেসিভির ইনজেকশন উৎপাদনের কাজ কার্যত আজ মঙ্গলবার (৫ মে) থেকেই শুরু করেছে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
দেশে রেমডেসিভির উৎপাদনের অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবদুল মুক্তাদির। তিনি বলেন, ইনসেপটার বিশেষজ্ঞরা আজ থেকেই কাজ শুরু করেছে। দ্রুত উৎপাদনের লক্ষে রাতদিন কাজ করছেন বিশেষজ্ঞরা। আশা করা যাচ্ছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রেমডিসিভির সরবরাহ করতে পারবে। বিরামহীন কাজ করে আগামী ১৫ থেকে ২০ মে’র মধ্যে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
রেমডেসিভির কাঁচামাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রেমডেসিভির তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এরই মধ্যে চীন থেকে দেশে এসেছে। আমেরিকার রেমডেসিভির প্রস্তুতকারক কোম্পানি গিলিয়াড সায়েন্সেসও চীন থেকেই এই ওষুধ তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করেছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, এর আগে রেমডেসিভির তৈরিতে সাতটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া হয়। নতুন করে আরও একটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে মোট আটটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া হলো।
কবে নাগাদ তারা উৎপাদনে যাবে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না তারা উৎপাদনে কবে যাবে। তবে আশা করা যায় এ মাসের মধ্যে ওষুধটি বাজারে চলে আসবে।
গতকাল পর্যন্ত ইনসেপটা, বিকন, স্কয়ার, বেক্সিমকো, অপসোনিন, এসকেএফ এবং হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এই সাত কোম্পানিকে অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। নতুন করে অনুমোদন পাওয়া কোম্পানির নাম জানাননি তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেমডেসিভির ইনজেকশন তৈরিতে খুব কম তাপমাত্রায় কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটাতে হয়। সর্বনিম্ন মাইনাস ৫০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৭৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। এমনকি যখন যৌগিক সংমিশ্রণ করা হয়, তখন একটি বিশেষ ডিভাইস প্রয়োজন হয়।
রেমেডিভির প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও সরঞ্জামের ঘাটতি না থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ক্যান্সার সিস্টেম বায়োলজি (সিসিএসবি) দুই সপ্তাহের মধ্যে ৩০ হাজার রোগীর জন্য ওষুধ তৈরিতে সক্ষম বলে জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় রেমডেসিভির ইনজেকশন ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এই ওষুধ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে রেমডেসিভির প্রস্তুতকারক কোম্পানি গিলিয়াড সায়েন্সেস। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ-এর তত্ত্বাবধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১০৬৩ মানুষের ওপর এ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। রেমডেসিভির গ্রহণকারীরা গড়ে ১১ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরীক্ষামূলক অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ রেমডেসিভির ওষুধটি মূলত ইবোলার চিকিৎসায় তৈরি হয়।