চরমোনাই থেকে ফিরে শামীম আহমেদ:
চিনের খাকি ক্যাম্বেল,বেজিং ও জিনডিং তিন জাতের হাসের খামার করে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগরের রাজধর গ্রামের মাসাল্লাহ্ ভাই ভাই হাঁস ফার্মের পরিচালক ওমর ফারুকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
প্রতিদিন গড়ে ১ শত ২৫ টি হাসি থেকে ডিম খামার থেকে পাওয়া যাচ্ছে। যা ৪৪ টাকা হালি দরে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে । খামারে ২ শত ৯৫টি হাসি রয়েছে অন্যদিকে হাঁসা রয়েছে ৯৫ টি। ইতি মধ্যে কিছু কিছু হাঁসি ৬ মাসেরস্থলে ৫ মাসের মাথায় উক্ত হাঁসিগুলো ডিম দিতে শুরু করেছে। সামনে বাকি হাঁসি গুলো ডিম দেওয়া শুরু করলে এর পরিসংক্ষান আরো বেড়ে যাবে। ফার্মে এখনো সব হাঁসিতে ডিম দেওয়া শুরু করেনি সেগুলোতে দেওয়া শুরু করলে ডিম বিক্রি করার মাধ্যমে আয়ের অর্থের পরিমান আরো বেশী হবে বলে ফারুক আশা করছেন।
সরেজমিনে গেলে ওমর ফারুক জানান চলতি বছরের ৫ই এপ্রিল নেত্রকোনা থেকে চিনের ৩ জাতের ৬শ’ বাচ্ছা ক্রয় করে সেগুলো বরিশালে বহন করে নিয়ে আসার পথে ৮ থেকে ১০টি বচ্চা মারা যায়।
বেঁচে থাকা বাচ্চা দিয়ে ফারুক খামারের যাত্র শুরু করে। প্রথমে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা দিয়ে খামারের কার্যক্রম যাত্রা শুরু করা হলে পরবর্তিতে যা খরচের পরিমান বেড়ে গিয়ে দাড়ায় সোয়া ২ লক্ষ টকা।
প্রথম পর্যায়ে খামারে প্রতি মাসে হাঁসের খাবার ক্রয় করা থেকে বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে তার ৬০ হাজার টাকা খরচ হত।
বর্তমানে হাঁসগুলো বড় হওয়ার পাশাপাশি খরচের অর্থের পরিমান সাশ্রয় হয়ে ২৮ হাজার টাকায় এসে দাড়িয়েছে। তিনি বলেন প্রথমদিকে তার খাবারের পিছনেই বড় একটি টাকা খরচ হয়েছে।
অন্যদিকে হাঁসগুলোকে প্রাকৃতিক থাবার দেয়া যেত তাহলে খরচের পরিমান কম হত যেহেতু খামারের ভিতরে রেখে খাবার দেয়ার কারনেই বড় অংকের টাকা খরচ হয়েছে।
এখন হাঁসগুলো নিজেরাই ঘুড়ে ঘুড়ে ও পাশ্ববর্তী খাল-বিলে প্রাকৃতিক খাবার সংগ্রহ করে খাওয়ার কারনেই তার গড়ে প্রতিদিন ১টি হাঁসের পিছনে এখন ১ টাকা খাবার প্রতি খরচ হচ্ছে।
এছাড়া খামারের হাঁসের পিছনে ১ টা ভ্যাকসিন ক্রয় করে ১শ’ হাসের মাঝে দিতে হয়। এর মধ্যে প্রথম প্রর্যায়ে ২৫দিন দ্বীতিয় প্রর্যায়ে ৪৫ দিন পর দিতে হয়।
হাঁসের ডাক প্লেগ ভ্যাকসিন ৪০ টাকা ও ডাক কলেরার ভ্যাকসিন বাজার থেকে ৫০ টাকা দরে ক্রয় করে কিনতে হচ্ছে। তবে হাঁসের ডাক কলেরার ভ্যাকসিন ৬০ থেকে ৭৫ দিন পর পর দিতে হয় তা সঠিক সময়ে দিতে ভুল করা হলে হাঁস বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাবার সম্ভবনা থাকে বেশী।
ফারুক মনে করেন সামনে তার প্রতিটি হাঁসি ডিম দেয়া শুরু করলে গড়ে সে প্রতিদিন ৮০% পাসেন্ট ডিম যদি খামার থেকে আসে আর সেই সাথে বাজার থেকে ন্যায্য দাম পাওয়া যায় তাহলে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাকে হবে না।
এছাড়া ফারুকের মাসাল্লাহ্ ভাই ভাই ফার্মে কোন কর্মচারী নেই সে নিজেই সকল হাঁসের দেখা শুনা করে থাকেন। ফারুক এসময় আরো বলেন তার খামার থেকে কোন হাঁসি বিক্রি করেন না। তবে মাঝে মাঝে হাঁসা বিক্রি করে থাকেন।
তিনি আরো বলেন এখন একদিকে ফার্মে খাবারের পিছনে খরচ কমে এসেছে অন্যদিকে হাঁসিগুলো দিতে শুরু করায় তার সামনে এখন সোনালী স্বপ্নের আলো জ্বলে উঠতে শুরু করেছে।
সেই সাথে এখন আর তেমন ব্যায়ের পিছনে ছুটে চলা নয়। এখন ঘড়ে অর্থের আলো নিয়ে আসাই তার স্বপ্ন। সেই সাথে
ফারুকের ইচ্ছা তার এই হাঁসের ফার্ম আরো বড় করে বিভিন্ন জাতের হাঁস পালনের ইচ্ছা রয়েছে তার। ফারুক মনে করেন বাজারে যদি ডিমের দাম সঠিকভাবে পাওয়া যায় তাহলে দেশে ডিমের যেমন ঘাটতি থাকবেনা। তেমনি এই খামারী পেশায় অনেক যুব সমাজের তরুনরা আগ্রহ প্রকাশ করে এগিয়ে আসবে।