বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

বিদেশে নারী কর্মী পাঠানোর শীর্ষে ঢাকা, পিছিয়ে পার্বত্য অঞ্চল

বিদেশে নারী কর্মী পাঠানোর শীর্ষে ঢাকা, পিছিয়ে পার্বত্য অঞ্চল

বিদেশে নারী কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে সারাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা জেলা। এরপরই জায়গা করে নিয়েছে মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ। তবে সবচেয়ে কম সংখ্যক নারী বিদেশে গেছেন পার্বত্য জেলাগুলো থেকে।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যমতে, ২০০৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গত ১৩ বছরে ঢাকা জেলা থেকে ৮৯ হাজার ৮৮০ নারী বিদেশে গেছেন। একই সময়ে মানিকগঞ্জ থেকে ৫০ হাজার ২০ জন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ৪৭ হাজার ৩৩০ জন এবং ফরিদপুর থেকে ৪৬ হাজার ১৯৩ জন নারী বিদেশে গেছেন।

১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৮৬ লাখ ৬ হাজার ৬৩৩ জন নারী চাকরি নিয়ে বিদেশে গেছেন বলে বিএমইটি জানিয়েছে।

বিশ্বের প্রায় ১৮টি দেশে বাংলাদেশের নারী কর্মীরা কর্মসংস্থানের জন্য যাচ্ছেন। নারী কর্মীদের প্রধান গন্তব্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, লেবানন, জর্ডান প্রভৃতি।

বিএমইটির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবচেয়ে কম সংখ্যক নারী বিদেশে গেছেন রাঙ্গামাটি থেকে। গত ১৩ বছরে এ জেলা থেকে মাত্র ৫২৮ নারী বিদেশে কাজ করতে যান। এ ছাড়া পার্বত্য এলাকার জেলা বান্দরবান থেকে ৬১১ জন এবং খাগড়াছড়ি থেকে ৮৬৯ নারী বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য গেছেন।

বগুড়া ছাড়া উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলো থেকেও কম সংখ্যক নারী কর্মী বিদেশে যেতে দেখা গেছে। এসব জেলাগুলো থেকে ৫ হাজারেরও কম নারী শ্রমিক বিদেশে গেছেন। ২০০৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বগুড়া জেলা থেকে বিদেশে গেছেন মাত্র ৮ হাজার ১৯৯ নারী।

অভিবাসন বিশ্লেষকরা বলছেন, বন্ধু, স্বজন এবং পরিবারের মাধ্যমেই মূলত বাংলাদেশিরা বিদেশে কর্সংস্থানের জন্য গিয়ে থাকেন। তাদের মতে, দেশের সব জেলা থেকেই সমানভাবে নারী শ্রমকিদের বিদেশে চাকরির সুযোগ পাওয়া উচিত।

বিদেশ পাঠানোর ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা জেলা বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল ও পার্বত্য জেলাগুলোর দিকে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দেন বিশ্লেষকরা। তবে বিদেশ পাঠানোর আগে নারীদের প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা চালু করার আহ্বান জানান তারা।

বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘নারী কর্মীদের বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর প্রতি দৃষ্টি রাখা উচিত। এতে করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।’

উত্তরাঞ্চল ও পার্বত্য অঞ্চলের নারী কর্মীরা বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেন না বলে মনে করেন তিনি।

সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘সঠিক তথ্য সরবরাহের পাশাপাশি দক্ষতা প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য পরিষেবা যথাযথভাবে সরবরাহের জন্য কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে নারী কর্মীদের জন্য নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল অভিবাসন নিশ্চিত করতে হবে। কারণ বিদেশে কর্মক্ষেত্রে আমাদের নারীরা নানারকম শোষণের শিকার হচ্ছেন।’

বিএমইটির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, জয়পুরহাট এবং জামালপুরর থেকে গত ১৩ বছরে অন্তত ১০ হাজার করে নারী কর্মী বিদেশে পাঠানো হয়েছে।

এ সময়ে বরিশাল থেকে ২০ হাজার ৫৩৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩১ হাজার ৫২১, কুমল্লিা থেকে ২৪ হাজার ৬৭৮, গাজীপুর থেকে ৩৬ হাজার ৫৯১, হবিগঞ্জ থেকে ৩৪ হাজার ৪১০, কিশোরগঞ্জ থেকে ২৫ হাজার ৪৩ জন নারী বিদেশে গেছেন।

বিএমইটি পরিচালক (প্রশিক্ষণ) নুরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রবাসে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে ৪১টি জেলা পিছিয়ে রয়েছে বলে আমরা দেখেছি। এসব অঞ্চল থেকে নারীসহ শ্রমিকদের বিদেশে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’

সম্প্রতি দক্ষ শ্রমিকদের নেয়ার ক্ষেত্র জাপানের জন্য বাংলাদেশ একটি উৎস দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া ওইসব জেলা থেকে বিদেশে চাকরি প্রার্থীদের জন্য জাপানি ভাষার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আমরা জাপানের শ্রম বাজারে পাঠানোর জন্য তাদের তৈরি করছি।’

ইতোমধ্যে রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনে তিনটি ব্যাচ জাপানি ভাষা কোর্স সম্পন্ন করেছে বলেও উল্লেখ করেন নুরুল ইসলাম।

এ ছাড়া হংকংয়ের শ্রম বাজারে পাঠানোর খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানে নারী চাকরি প্রার্থীদের ক্যান্টোনিজ ভাষার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নুরুল ইসলাম বলেন, ‘নিরাপদ নারী অভিবাসন বাড়াতে প্রতিটি টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নারী শ্রমিকদের দক্ষতা প্রশিক্ষণের দিকেও মনোনিবেশ করা হচ্ছে।’

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech