এবার ঈদ কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন না বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও নার্সরা।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে এ মুহূর্তে চিকিৎসাধীন ৩৮ জন। তাদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১০ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের সংস্পর্শে থেকে সাতদিন চিকিৎসা সেবা প্রদান করার পর চিকিৎসক ও নার্সদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়। এ মুহূর্তে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ও সন্ধিগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা সেবায় তিনজন চিকিৎসকসহ ছয়জন নার্স দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও সাতদিন দায়িত্ব পালন শেষে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ছয়জন চিকিৎসকসহ আরও ১২ জন নার্স।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনরত সিনিয়র স্টাফ নার্স রাবেয়া আক্তার মালা বলেন, এবারের ইদে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারছি না। বাসায় আমার একটি সন্তান আছে, তাকেও সময় দিতে পারছি না। একজন মা হিসেবে এ খারাপ লাগাটা কখনও বলে বোঝানো যাবে না।
তিনি আরও বলেন, এতসব খারাপ লাগার মধ্যেও ভালো লাগছে এই ভেবে- আমি দেশের মানুষের সেবায় একটু হলেও অবদান রাখতে পারছি। আমাদের এ ত্যাগের মাধ্যমে হলেও একের পর এক করোনাভাইরাসে সংক্রমিত মানুষ ও তার পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পারছি। এবারের ঈদে আমার কাছে এটাই সব থেকে বড় প্রাপ্তি।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের প্রধান ডা. মো. কামরুল আজাদ বলেন, আমরা শুধু চাকরির সুবাদে দায়িত্ব পালন করছি না। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধের জায়গা থেকেও আমরা এখানে নিয়োজিত রয়েছি।
তিনি বলেন, ঈদের দিন আমাদের স্বজন এবং বন্ধুরা যখন তাদের আনন্দঘন মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করবেন, সেই সব ছবি দেখে আমার একমাত্র সন্তানের কথা ভেবে হলেও মনটা খারাপ হবে। তারপরও এসব মেনে নিয়েই আমরা আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার মাধ্যমে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ও সন্ধিগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যাব।
বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে স্বজনদের মাঝে ফিরেছেন ৩১ জন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন দুজন। এছাড়া চিকিৎসাধীন ১৬ জনও রয়েছেন সুস্থ হওয়ার পথে।