স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পরও বাংলাদেশ-ভারত সীমানায় সীমান্ত পিলারে লেখা ছিল ‘পাকিস্তান’ বা ‘পাক’। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর সীমান্ত পিলার থেকে এই ‘পাকিস্তান’ বা ‘পাক’ লেখা অপসারণ করে ‘বাংলাদেশ’ বা ‘বিডি’ লিখেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির সদস্যরা। সীমান্তে প্রায় ৮ হাজার পিলারে করা হয়েছে এই পরিবর্তন।
বিজিবি থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সীমান্তের কোনো পিলারে এখন থেকে ‘পাকিস্তান বা পাক’ লেখা থাকবে না। সেখানে থাকবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নাম।
বিজিবি সূত্র জানায়, ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর ৮ হাজারের অধিক পিলারে ইংরেজিতে খোদাই করে ইন্ডিয়া/পাক এবং ইন্ডিয়া/পাকিস্তান লেখা ছিল। মূলত বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, সুনামগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম সীমান্তের অনেক পিলারে পাকিস্তান/পাক লেখা ছিল।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধে মাধ্যমে ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের এত বছর পরও সীমান্ত পিলারগুলো থেকে পাকিস্তান বা পাক শব্দের বদলে বাংলাদেশের নাম না থাকার বিষয়টি সীমান্তে বসবাসকারী বাঙালি ও বাংলাদেশের সকল মানুষের কাছে ছিল লজ্জার। বিষয়টি নজরে আসার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলামের অধীনস্ত রিজিয়নসমূহকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এরপর বিজিবির নিজস্ব তহবিল থেকে এসব সীমান্ত পিলার থেকে পাকিস্তান বা পাক লেখা অপসারণ করে বাংলাদেশ বা বিডি লেখার কাজ শুরু হয়।
বিজিবি সূত্র জানায়, বিজিবির সদস্যরা অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে এরই মধ্যে সীমান্ত পিলার থেকে পাকিস্তান বা পাক লেখা মুছে বাংলাদেশ বা বিডি লেখার কাজ সম্পন্ন করেছেন। সীমান্ত পিলারে বাংলাদেশ শব্দটি প্রতিস্থাপনের কারণে বিজিবিসহ সীমান্তবর্তী মানুষের মনোবল আরও বেড়েছে। বিজিবি দ্রুত ও নিখুঁতভাবে কাজটি করায় সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাসহ দেশের সাধারণ জনগণ বিজিবিকে সাধুবাদ জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও বিজিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।