৮ দিনের ব্যবধানে পদ্মা সেতুতে বসানো হলো ৩৩তম স্প্যান। সোমবার (১৯ অক্টোবর) সকালে স্প্যানটি বসানো হয়। ফলে সেতুটির প্রায় পাঁচ কিলোমিটার (৪ হাজার ৯৫০ মিটার) দৃশ্যমান হলো।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর বহুমুখী সেতুটির ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটির ওপর স্থাপন করা হয় ৩২তম স্প্যান। ৩১তম স্প্যান বসানোর ৪ মাস পর এ স্প্যানটি বসানো হয়েছিল। এবার মাত্র ৮ দিন পর বসানো হলো ৩৩তম স্প্যান।
গত আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ৫টি স্প্যান খুঁটির ওপর বসানোর লক্ষ্য ছিল। তবে মাওয়া প্রান্তের মূল পদ্মায় প্রচণ্ড স্রোত থাকায় একটি স্প্যানও বসানো সম্ভব হয়নি। এখন পদ্মায় বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের তীব্রতাও স্বাভাবিক গতিতে ফিরেছে। ফলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজেও গতি ফিরেছে।
এদিকে ২৫ অক্টোবর ৭ ও ৮ নম্বর পিয়ারের ওপর ৩৪তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। ৩০ অক্টোবর ২ এবং ৩ নম্বর পিয়ারের ওপর ৩৫তম বসানো হবে। ৪ নভেম্বর ৩৬তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থাৎ প্রতি পাঁচ দিন অন্তর একটি করে স্প্যান বসানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। বাকি পাঁচটি স্প্যানও চলতি বছরই বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল পদ্মা সেতুতে মোট ৪২টি খুঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ২১টি ও জাজিরা প্রান্তে ২১টি। আর ৪২টি খুঁটির ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ৩২টি স্প্যান। প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
বহুমুখী এ সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।