ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি মো. মজনুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম কামরুনাহার আসামি মজনুর উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
রায় শেষে মজনুকে ফাঁসির দণ্ড দিয়ে ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ দণ্ডের বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেন।
রায়ের প্রদানের আগে চার্জশিটের ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ভিকটিম, ভিকটিমের বাবাসহ ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ১৬ মার্চ মজনুর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এর আগে ১৬ জানুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় মজনু। মামলায় গ্রেফতারের পর থেকেই তিনি কারাগারে ছিলেন।
গত ৫ জানুয়ারি ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন কুর্মিটোলা বাস স্ট্যান্ড থেকে ফুটপাত দিয়ে ৪০/৫০ গজ সামনে আর্মি গলফ ক্লাব মাঠ সংলগ্ন স্থানে ধর্ষণের শিকার হন ভিকটিম (২১)। চার্জশিটে বলা হয়, আসামি মজনু পিছন থেকে গলা ধরে মাটিতে ফেলে গলা চেপে কিল-ঘুষি মেরে ভয়ভীতি দেখালে ভিকটিম অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন মজনু ভিকটিমকে অচেতন অবস্থায়ই ধর্ষণ করেন।
গত ৮ জানুয়ারি মজনুকে ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন শেওড়া বাস স্ট্যান্ডের পূর্ব পাশের পাকা রাস্তার উপর হতে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তি মতে ভিকটিমের ব্যাগ, মোবাইল ও পাওয়ার ব্যাংক এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত একটি জিন্সের প্যান্ট ও একটি জ্যাকেট উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
ধর্ষনের ঘটনায় গত ৬ জানুয়ারি ভিকটিমের অধ্যক্ষ বাবা বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। ভিকটিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
মামলার এজাহার হতে জানা যায়, ভিকটিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে থাকতে। গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে তার বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে রওনা করে। রাত ৭টার দিকে বাসটি ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন কুর্মিটোলা বাস স্ট্যান্ডে থামে। সে বাস থেকে নেমে ফুটপাট দিয়ে ৪০/৫০ গজ শেওড়ার দিকে হেঁটে আর্মি গলফক্লাব মাঠ সংলগ্ন স্থানে পৌঁছালে পিছন দিক থেকে অজ্ঞাতনামা ২৫/৩০ বছর বয়সী যুবক গলা ধরে তাকে ফুটপাতের পাশে মাটিতে ফেলে দেয় এবং তার গলা চেপে ধরে। সে অজ্ঞান হয়ে পড়লে আসামি ভিকটিমকে ধর্ষণ করে।