নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি কোভিড ১৯ এর কারনে গতবছর ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলমান ছুটি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আগামী ২৪ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করে গত ২২ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রনালয়। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ড . দিপু মনি ‘র সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রনালয়ের সভা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে মন্ত্রী এ সিদ্ধান্ত জানান। চলতি সময়ের মধ্যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, আবাসিক হল ও হোস্টেল বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়। সরকারি প্রজ্ঞাপনে বন্ধকালীন সময়ের মধ্যে যদি কেউ আবাসিক হল ও হোস্টেলে অবস্থান করে তাহলে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজুলেশন ও সরকারি আইন অমান্যের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির আওতায় ব্যবস্হা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু এসময় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বরিশাল সরকারি বিএম কলেজের মহাত্মা অশ্বিনী কুমার হোস্টেলের এ ব্লকের তালা ভেঙ্গে দিনভর পিকনিক ও বিশেষ রাজনৈতিক সভার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা এস এম ইভান সরকারি বিএম কলেজের বিলুপ্ত কর্মপরিষদের স্বঘোষিত ভিপি মঈন তুষারের অনুসারী ছিলেন এবং ২৬ সদস্য কর্মপরিষদের ২৮ নম্বরের কথিত সদস্য। জানা গেছে ক্যাম্পাস খোলার পর নতুন রাজনৈতিক পরিকল্পনা সামনে রেখে এস এম ইভান কিছু অনুসারীদের নিয়ে বন্ধ ক্যাম্পাসের নির্জন হোস্টেলে রাজনৈতিক সভা ও পিকনিকের আয়োজন করে সেখানে প্রায় ৭০- ৮০ জন যোগদান করে। সকাল ১০ টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত জুমার নামাজের বিরতি দিয়ে চলে আলোচনা পরে ভুজিভোজ শেষে সবাই হোস্টেলে অবস্হান করছেন এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে বিশ্বস্ত সুত্র। এর আগে বন্ধের মধ্যে কয়েক দফা হোস্টেল খোলার দাবীতে অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি, সভা ও ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল করেছেন এই নেতা।
এব্যাপারে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার হোস্টেলের এ ব্লকের দায়িত্বে থাকা সহকারী সুপার কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন আমি ছুটিতে আছি গতবছর ১৭ মার্চ থেকে হোস্টেল তালা মারা রয়েছে আমি শুনছি ভিতরে কিছু ছাত্র অবস্হান করছে যারা ভিতরে অবস্হান করছে তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে। হোস্টেল সুপার অধ্যাপক শাহ আলম হাওলাদার বলেন আমরা বার বার চেষ্টা করে কিছু ছাত্রলীগ নেতাদের হোস্টেল ত্যাগ করাতে পারিনি, এরা হোস্টেলে গ্রিল ভেঙ্গে কখনো তালা ভেঙ্গে হোস্টেলে অবস্হান করছে, পিকনিক এবং মাদকের আড্ডা বসাইছে আমাদের কাছে এমন অভিযোগ আছে, কিন্তু সার্বক্ষণিক আমরা অবস্হান না করার সুযোগে এগুলো হচ্ছে। আজই এদের উচ্ছেদ করার জন্য ব্যবস্হা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে সরকারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. গোলাম কিবরিয়া বলেন আমার কাছে এমন তথ্য নাই আমি এখনই খোঁজখবর নিতাছি যদি এরকম ঘটে এবং আমাদের কোন ছাত্র এর সাথে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্হা নেয়া হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর ড. অলোক কুমার সাহা ‘র কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সকল কলেজ ও কলেজের আবাসিক হোস্টেল বন্ধ রয়েছে। কোন হোস্টেলে ছাত্রদের অবস্হান করার সুযোগ নাই, আমরা খোঁজখবর নিয়ে এব্যাপারে সত্যতা পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করবো। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন একইভাবে বলেন কলেজ ও হোস্টেল বন্ধ যদি কেউ সরকারি আদেশ অমান্য করে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্হা নেয়া হবে।