বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

বরিশালে হাতুড়ি পেটায় ১০ হাফেজ আহত, অনির্দিষ্টকালের জন্য মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা

বরিশালে হাতুড়ি পেটায় ১০ হাফেজ আহত, অনির্দিষ্টকালের জন্য মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা

শামীম আহমেদ ॥
শিক্ষক কর্তৃক কেতাব বিভাগের ছাত্রদের ব্যঙ্গ করে ডাকা ও অসদাচরনের প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষককে অবরুদ্ধ, মুহতামিমকে লাঞ্ছিত ও কেতাব বিভাগের ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় হাতুড়ি পেটায় ১০ জন হাফেজ আহত হয়েছে। গুরুত্বর আহত একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার গৌরনদী উপজেলার বার্থী উলূমে দীনিয়া কওমী মাদ্রাসায়। মাদ্রাসার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক ও আহত ছাত্ররা জানান, মাদ্রাসার নুরানী বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মানিক বেপারী প্রায়ই ব্যঙ্গ করে কেতাব বিভাগের ছাত্রদের ডাকেন এবং অসদাচরন করে আসছিলেন। ছাত্ররা এর প্রতিবাদ করায় শিক্ষক মানিক বেপারী ক্ষিপ্ত হয়ে অতিসম্প্রতি কেতাব বিভাগের ছাত্র মোঃ শাহ্জালাল ও মোঃ মাহামুদকে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা সোমবার সকালে মাদ্রাসার মুহ্তামিম মুফতি হাফেজ আমিনুল ইসলামের কাছে যায়। বিচার দেয়ার কারণে শিক্ষক মানিক বেপারী ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিন দুপুরে ক্লাস রুমে ঢুকে কেতাব বিভাগের ছাত্র রফিকুল ইসলাম ও মাহামুদ হোসেনকে পিটিয়ে আহত করে। এসময় কেতাব বিভাগের অন্যান্য ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মানিককে ধাওয়া করে। এসময় শিক্ষক মানিক দৌঁড়ে মাদ্রাসার মুহতামিমের কক্ষে আশ্রয় নিলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা তাকে প্রায় আধাঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। আহত শিক্ষার্থীরা আরও জানান, এ ঘটনায় কেতাব বিভাগের ছাত্ররা বিচারের দাবি করে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান প্যাদার বাড়িতে যায়। এ সময় শিক্ষক হাফেজ মানিক ও তার মামা জাফর প্যাদার নেতৃত্বে বহিরাগত ১৫/২০জন যুবক হাতুড়ি ও লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রদের জঙ্গি অপবাদ দিয়ে অর্তকিতভাবে হামলা চালায়। এসময় হাতুড়ি পেটায় কেতাব বিভাগের ছাত্র হাফেজ জাহিদুল ইসলাম, হাফেজ হাফিজুর রহমান, হাফেজ আবু ইউসুফ, হাফেজ সোয়াইব, হাফেজ হোসেন, হাফেজ মোঃ হাসানউদ্দিন, হাফেজ হাবিবুল্লাহসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। গুরুত্বর আহত হাফেজ জাহিদুল ইসলামকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার সময় শাহজাহান প্যাদা বাড়িতে ছিলেন না। এ ঘটনায় কেতাব বিভাগের ছাত্র হাফেজ মোঃ সোয়াইব বাদি হয়ে সোমবার দিবাগত রাত দশটার দিকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ অস্বীকার করে মাদ্রাসার নুরানী বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মানিক বেপারী বলেন, কেতাব বিভাগের দুই ছাত্র বেয়াদবী করার কারণে তাদের বকাঝকা করা হয়েছে। মাদ্রাসার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি ছাত্রদের দিয়ে নানা অপবাদ রটিয়েছে। মাদ্রাসার মুহ্তামিম মুফতি আমিনুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান প্যাদার নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে কেতাব বিভাগের ক্লাস অনির্র্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, একটি মহল আমাকে ও কেতাব বিভাগের ছাত্রদের জঙ্গি বানানোর হুমকি দিয়েছে। এমনকি সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে মাদ্রাসার কম্পাউন্ডে স্থানীয় আজিজ বেপারী আমাকে লাঞ্ছিত করেন। মুহ্তামিম বলেন, সভাপতির নির্দেশে পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য মঙ্গলবার সকালে অবসরপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক শওকত হোসেনকে প্রধান করে সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ আফজাল হোসেন জানান, সোমবার রাতে অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অভিযোগের তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech