নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড, জাতির মেরুদন্ডকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন শিক্ষকরা। সেই শিক্ষাগুরুর বিরুদ্ধে যখন নৈতিক স্থলনের অভিযোগ উঠলে অভিযুক্ত শিক্ষক সকলের ঘৃনার পাত্রে পরিণত হন। তবে অনেক সময় যা রটে, তার অনেক কিছুরই বাস্তবের সঙ্গে মিল থাকে না। যেমনটি ঘটেছে বরিশালে। সদর উপজেলার সাহেবেরহাট শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রী কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক হুমায়ন কবির সুমনের বিরুদ্ধে অনৈতিকতার অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এক শিক্ষার্থী। তার দাবি- বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করেছেন শিক্ষক সুমন। তার জবানবন্দি দেওয়া ভিডিও ফুটেজও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে তিনি শুধু মুখেই অভিযোগ বলছেন। এর স্বপক্ষে কোন ধরনের প্রমাণ তিনি এখনো পর্যন্ত দেখাতে পারছেন না। অপরদিকে, অভিযুক্ত শিক্ষক সুমন বলছেন- আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যদি ওই মেয়ে প্রমাণ করতে পারি আমি তার সঙ্গে অনৈতিক কোন কিছু করেছি, যা শাস্তি হয় আমি মাথা পেতে নেব। একদিকে মেয়েটির প্রমাণহীন অভিযোগ, অপরদিকে অভিযুক্তের বলিষ্ঠ কণ্ঠে তা প্রত্যাহার; কথাটি বেমানান হলেও বেশ কিছু দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে মেয়েটির অভিযোগ অসত্য বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে অভিযোগকারীর উদৃতি বলা হয়েছে- মেয়েটি ওই কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ৩ বছরের বেশি চলে তাদের সম্পর্ক। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রায় সময় করতেন দৈহিক মেলামেশা। শহরের বিভিন্ন হোটেল, বাসাবাড়ি এমনকি লঞ্চের কেবিনে স্ত্রী পরিচয়ে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছে। মেয়েটি আরো বলেছেন, উপায়ান্ত না পেয়ে তিনি সুমনের বাড়ি বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চরকগাছিয়া গ্রামে চলে যান। সেখানে বিয়ের দাবিতে অনশন করেন। তখন তার উপর শারীরিক নির্যাতন করেছে সুমনের পরিবার । তখন মেয়েটি ৯৯৯-এ কল করলে আমতলী থানার এসআই তাজুল ঘটনাস্থলে যান। পরে পরিবারের আশ্বাসে মেয়েটি নিজ বাসস্থান বরিশালের টুঙ্গিপাড়ায় চলে যান। মেয়েটি ভিডিও বার্তায় ও সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য দিলেও প্রশ্ন উঠেছে, তারা প্রকৃত ভুক্তভোগী হলে কেন এখন পর্যন্ত আইনের আশ্রয় নেয়নি? বরিশাল বন্দর থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, এ বিষয়ে মেয়ের পরিবার থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দ্বিতীয়ত মেয়েটির অভিযোগ বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার। সেক্ষেত্রে এই আধুনিক যুগে যেখানেই যায়, সবাই ভাললাগার মুহূর্ত মোবাইলের ক্যামেরাবন্দি করে রাখে। মেয়েটি তিন বছরের সম্পর্কের কথা বললেও তার কাছে একটি ছবিও নেই সুমনের সঙ্গে। এছাড়া, সুমনের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশনের বিষয়ে সুমন বলেন, সে আমার গ্রামের বাড়ির এলাকায় গিয়েছিল। কিন্তু কোন অনশন করেনি। ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ এসেছিল। কিন্ত অভিযোগের সত্যতা না পেয়েছে মেয়েটিকে থানায় নিয়ে গেছে। আর যদি তার অভিযোগ সত্য হত, তাহলে তো আমার বিরুদ্ধে মামলা হত কিংবা অন্য কোনভাবে পুলিশ এর ফয়সালা করতো। সুমন তার ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথা বলেছে বলে মেয়েটি দাবি করেছে। যদি প্রেমের সম্পর্ক থাকতো, তাহলে মেসেঞ্জারে সেই প্রমাণ থেকে যাওয়ার কথা। সুমন নিশ্চিত করে বলেছেন, তার সঙ্গে ছাত্রী হিসেবে কথা হয়েছে। যখনই সে ভিন্ন ভঙ্গিতে কথা বলা শুরু করে, তাকে বøক করে দিয়েছি। সুমন আরো বলেন, আমি ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত। স্থানীয় পত্রিকায় আসা সংবাদ ইতোমধ্যে আমার কেন্দ্রীয় পর্যায়ে পৌঁছানো হয়েছে। এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রও হতে পারে। তবে যে কারণেই হোক না কেন, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগই মিথ্যা। অপরদিকে, শহিদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মশিউর রহমানের কাছে সুমনের বিরুদ্ধে মেয়েটি এসব অভিযোগ করলে অধ্যক্ষ তাকে বিচার করবেন বলে আশ্বস্ত করে যেসব প্রমাণ রয়েছে সেগুলো দিতে বলেন। কিন্তু মেয়েটি তাকে কোন প্রমাণ দিতে না পেরে উল্টো অধ্যক্ষ বিচার করছে বলে তার বিরুদ্ধেও মিথ্যা কথা রটাচ্ছেন।