এছাড়া, আইন করার পাশপাশি সার্চ কমিটি গঠনের জন্য নাম প্রস্তাব করেছে বিকল্পধারা বাংলাদেশ। সার্চ কমিটির জন্য দলটি তিনজনের নাম প্রস্তাব করেছে। এরা হলেন, ব্যবসায়ী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রোকেয়া আফজাল রহমান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ভুঁইয়া এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সংলাপে অংশ নিতে বঙ্গভবনে যান ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্প ধারা। তবে, বদরুদ্দোজা চৌধুরী সংলাপে অংশ না নেয়ায় দলটির মহাসচিব মেজর অবসরপ্রাপ্ত আবদুল মান্নান ও দলের মুখপাত্র মাহী বি চৌধুরীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়। সংলাপে শেষে সাংবাদিকদের জানান তাদের মতামত।
সংলাপে অংশ নেয়া অন্য সদস্যরা হলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য মজহারুল হক শাহ চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক এবং যুগ্ম মহাসচিব এনায়েত কবির।
বিকল্পধারার আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয় ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম। সংলাপ শেষে দলটি জানায়, নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটিতে তাদের আস্থা নেই। সার্চ কমিটি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় বলেও জানায় দলটি। একইসঙ্গে, কমিশন গঠনে আইন করার দাবি জানায় দলটি। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন আইন গঠন করার দাবি জানায় গণফোরাম। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে দেশের ১৭ কোটি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে দলটি সংলাপে অংশ নিয়েছে বলেও জানান হয়।
দলের একাংশের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সংলাপে যোগ না দেয়ার বিষয়ে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, কারা সংলাপে আসল না তা গণফোরামের বিষয় না।
অসুস্থতার কারণে ড. কামাল হোসেন সংলাপে অংশ নিতে পারেননি। ফলে দলের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খান এমপি’র নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেয়। দলটির অন্য সাত সদস্য হলেন- গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আ. ও. ম শফিক উল্লাহ, মোশতাক আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার হারুনুর রশিদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগম, অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর, অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর এবং শাহ নুরুজ্জামান।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হয়েছে। গেল ২০শে ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ সংলাপে এরইমধ্যে ৯টি দল অংশ নিয়েছে। এরপর ২৩শে ডিসেম্বর চারটি এবং ২৯শে ডিসেম্বর আরও পাঁচটি দলকে সংলাপে অংশ নিতে বঙ্গভবন থেকে আমন্ত্রণ জানান হয়।
সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের কথা উল্লেখ থাকলেও গত ৫০ বছরে সে আইন হয়নি। এ পরিস্থিতিতে গত দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি সম্ভাব্য ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করার পর রাষ্ট্রপতি সেখান থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেন।
এমনই সার্চ কমিটি থেকে বর্তমান কে এম নুরুল হুদা কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ই ফেব্রুয়ারি। কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসছেন রাষ্ট্রপতি। সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো সার্চ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে যে নামগুলো প্রস্তাব করবে সেখান থেকেই রাষ্ট্রপতি যাদের যোগ্য মনে করবেন তাদের নিয়েই কমিশন গঠন হবে।