বরিশাল প্রতিনিধি:
অল্প পূজিতে বেশি লাভ হওয়ায় কুল চাষে ব্যাপক আগ্রহী হয়ে উঠছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা। পতিত জমিতে কুল চাষ করে ইতিমধ্যে স্বাবলম্বী হয়েছেন একাধিক কৃষক। উপজেলার খাঞ্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ইউসুফ হাওলাদার জানান, মহামারী করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় পর থেকে তার হজ্ব এজেন্সির ব্যবসায় ধ্বংস নামে। এরপর সে (ইউসুফ) গ্রামে এসে কৃষি কাজ শুরু করেন। গত সাত মাস পূর্বে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ নিয়ে দুই একর পতিত জমিতে ৮২০ টি বল সুন্দরী জাতের কুল চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার বাগানের প্রতিটি গাছ কুলে পরিপূর্ন। তিনি আরও জানান, কুল ও অন্যান্য চারা রোপন থেকে শুরু করে এযাবত তার চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যে গাছের প্রায় অর্ধেক কুল প্রতি কেজি ৫০ টাকা পাইকারী মূল্যে বিক্রি করে দিয়েছেন। কুল বিক্রি করে তিনি লাভবান হওয়ার আশা প্রকাশ করেন। উপজেলার মাহিলাড়া গ্রামের কৃষক ফারুক ফকির জানান, পূর্ব মাহিলাড়া এলাকায় বিলের মধ্যে ৫০ শতক অনাবাদি জমি লিজ নিয়ে এক লাখ টাকা ব্যয় করে গত বছর থেকে কুল চাষ শুরু করেন। এবছর তার বিভিন্ন প্রজাতির সাড়ে চারশ’ গাছে ফলন ধরেছে। ইতিমধ্যে বাগান থেকে ৬০ মন কুল ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। বাগানে এখনো প্রচুর পরিমাণ কুল রয়েছে। সব মিলিয়ে কুল চাষ করে তিনি এখন স্বাবলম্বী হওয়ার পথে। একই গ্রামের কৃষক নাজমুল সরদার জানান, বিলের মধ্যে মাছের ঘেরের চারপাশে বিভিন্ন প্রজাতির পাঁচ শতাধিক কুল গাছে গত বছরের চেয়ে এবছর ব্যাপক পরিমান ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। কুল বিক্রি করে তিনি এখন স্বাবলম্বী। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মামুনুর রহমান জানান, খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে দেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার পর কৃষি মন্ত্রণালয় পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এ উপজেলার অনাবাদী জমিগুলো চাষের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের চাষাবাদে উদ্বুদ্ধকরন ও পরামর্শ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। যার ফলে কৃষকরা পতিত জমিতে কুল, লেবু ও মাল্টাসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।