নির্বাচন কমিশন গঠনে সিইসি ও অন্যান্য ইসি পদে নাম চেয়ে বিশিষ্টজন, প্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী সংগঠন ও নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়েছে সার্চ কমিটি। আমন্ত্রিতদের সঙ্গে শনি ও রবিবার বৈঠক করবেন কমিটির সদস্যরা। এদিকে, কমিশন গঠনে দশজনের নামের তালিকা জমা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে চিঠি পেলেও সার্চ কমিটিকে নাম না দেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তি খুঁজে নিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৬০ জন বিশিষ্টজনের মতামত নেবে সার্চ কমিটি। এজন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, বিএমএ, জাতীয় প্রেসক্লাব, কেআইবি, আই ই বি, এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, আমাদের বিএমএ’র ওয়ার্কিং কমিটি বসে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে জানাবে।
দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত জানান, এটা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। যেখানে আমাদেরও ডাকা হয়েছে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। আমি আশা করি আলোচনার মাধ্যমে এমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠন হবে যেটি আগামীতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করবে।
এদিকে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির কাছে দশজনের নাম জমা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নাম দিয়েছে জাসদও।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি, নামও দিয়েছি। দেশের বড় দায়িত্বশীল পদে ছিলেন, যারা নৈতিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন, পেশাগত দক্ষতা ছিল, তাদের নামই দেওয়া হয়েছে।
জাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার জানান, এরইমধ্যে আমরা আমাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করেছি। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ এর পক্ষ থেকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবার জন্য যোগ্য যারা হতে পারেন, যারা ইতিমধ্যেই নিজের পেশায় খ্যাতি অর্জন করেছেন সেরকম ১০ জনের নামই আমরা পাঠিয়েছি।
তবে সার্চ কমিটির আহ্বানে সাড়া না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপিসহ কয়েকটি দল।
বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির (সিপিবি) সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ২০১৭ সালেও যখন আমরা দেখা করেছি এভাবে নাম দেওয়ার বিপরীতে আমাদের মতামত ছিলো। আমরা বলেছি যদি উনারা মনে করেন পরস্পর আলোচনা করতে পারেন, সরাসরি নাম দেওয়ার বিরোধিতা করেছি।
বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান জানান, ভুল প্রক্রিয়ায় যদি সঠিক কাজ করে সেটার ফলাফল কিন্তু সঠিক আসে না। সার্চ কমিটিতে কারা আছেন, তারা ভালো কি খারাপ, সেই আলোচনাটা এখানে গৌণ। মানুষের আস্থা অর্জন করা না গেলে যত ভালো লোক দিয়েই কমিটি গঠন করা হোক না কেন, একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা কঠিন হবে।
সিইসি ও অন্যান্য ইসি পদে দুইজন করে মোট দশজনের নাম রাষ্ট্রপ্রতির কাছে সুপারিশ করবে সার্চ কমিটি। সেখান থেকে পাঁচজনকে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। এই কমিশনের নেতৃত্বেই হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।