বরিশাল প্রতিনিধি : মোবাইল ফোনে কথা বলাকে কেন্দ্র করে গাড়ি চালককে মারধরের প্রতিবাদে বরিশালে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে মাইক্রোবাস শ্রমিকরা। এতে প্রায় দেড় ঘন্টা ডিসি ঘাট এলাকায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
শনিবার রাত ৯টায় এই ঘটনা ঘটে। মারধরে আহত মাইক্রোবাস চালক সাদ্দামকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মাইক্রোবাস ড্রাইভার সাইদুল জানান, বৃহস্পতিবার বাইফলের কালিশুরিতে সাদ্দামের চালিত একটি মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্নার আত্মীয় স্বজনরা। সেখানে বসে গাড়িতে মোবাইলে কথা বলায় সাদ্দামকে বেধরক মারধর করা হয়। এরপর সাদ্দাম কালিশুরি থেকে কাউকে কিছু না বলে চলে আসে বরিশালে। শনিবার রাতে এই ঘটনার জের ধরে আওয়ামী লীগ নেতা মুন্না ডিসি ঘাট এলাকায় এসে ড্রাইভার সাদ্দামকে খুজতে শুরু করে। তখন অন্যান্য ড্রাইভাররা বিষয়টি মীমাংসার জন্য সাদ্দামকে আনলে রাস্তায় বসে সাদ্দামকে মারধর শুরু করে মুন্না।
পরবর্তীতে ড্রাইভাররা আওয়ামী লীগ নেতা মুন্নাকে নিবৃত্ত করে ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শালিসীর জন্য নিয়ে যায়। এরই মধ্যে মুন্না ও তার স্বজনরা সাদ্দামকে পুনরায় ব্যাপক মারধর করে। এতে মুখ ও নাক থেকে সাদ্দামের রক্ত বের হয়ে যাওয়ায় তাকে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সাদ্দামকে মারধরের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছি আমরা।
আরেক ড্রাইভার রাকিব জানায়, সাদ্দামকে খুব খারাপ ভাবে মারা হয়েছে। তার নাক মুখ থেকে প্রচুর রক্ত বের হচ্ছিলো। দ্রুত চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে সাদ্দামকে নিয়ে যাওয়া হয়। আমাদের ড্রাইভারকে যে মারধর করেছে আমরা এর বিচার চাই।
এই বিষয়ে ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্নার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
১০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখর দাস খোকন বলেন, অনাকাঙ্খিত ঘটনার সমাধান করা হয়েছে।
বরিশাল জেলা ট্যাক্সি ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম নান্টু বলেন, আহত সাদ্দামকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া বিষয়টি সুষ্ঠ সমাধান করা হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া আহতের চিকিৎসা খরচ বহন করার কথা বলেছেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ড্রাইভার সাদ্দামের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি। চিকিৎসকের সাথে কথা বলেছি, সাদ্দামের গুরুত্বর কোনো সমস্যা হয়নি।
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, একজন ড্রাইভারকে মারধরকে কেন্দ্র করে সড়ক অবরোধ করা হয়েছিলো। আমরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে সকলকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে সকলকে সরিয়ে দিয়েছি।