বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

গৌরনদীতে মা-ছেলেকে পিটিয়ে জখম করে মটরসাইকেল পুড়িয়ে দিল ইউপি চেয়ারম্যান

গৌরনদীতে মা-ছেলেকে পিটিয়ে জখম করে মটরসাইকেল পুড়িয়ে দিল ইউপি চেয়ারম্যান

গৌরনদী প্রতিনিধি:
বরিশালের গৌরনদীতে আধিপত্য বিস্তারের বিরোধকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে গৌরনদী উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ ওরফে পিকলু হামলা চালিয়ে পিটিয়ে মা-ছেলেসহ তিনজনকে জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতরভাবে আহত মা ছেলেসহ তিন জনকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় আহত মা বাদি হয়ে গতকাল শুক্রবার ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। শুক্রবার পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

স্থানীয় লোকজন ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গৌরনদী উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ ওরফে পিকলুর সঙ্গে গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের প্রভাবশালী সদস্য মোঃ জিয়া সরদারের সঙ্গে দীর্ঘ দিনযাবত বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জের ধরে ইতোমধ্যে একাধিকবার উভয়ের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের প্রভাবশালী সদস্য মোঃ জিয়া সরদারের সমর্থক ও তার মামাতো ভাই মোঃ নিলয় হাওলাদার (১৭) অভিযোগ করে বলেন, আমার মটরসাইকেলে মা রুমা বেগম (৩৫) ও চাচা তরিকুল ইসলাম হাওলাদাকে (২৯) নিয়ে মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজে ভর্তির আলাপ আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার নিজ বাড়ি পিংলাকাঠি থেকে মাহিলাড়া কলেজে রওয়ানা হই। ওই দিন সকাল সোয়া ১১টায় মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজের সামনে সেতুর গোড়ায় মন্দিরের সামনে পৌছলে গৌরনদী উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ ওরফে পিকলু আমার মটরসাইকেলের পথরোধ করে আমার পরিচয় জানতে চান। পরিচয় দেওয়ার এক পর্যায়ে গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জিয়া আমার কি হয় জানতে চাইলে জিয়া আমার ফুফাতো ভাই পরিচয় দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারম্যান পিকলু লাথি মেরে মটরসাইলে থেকে আমাদের তিনজনকে ফেলে দেয়। এ সময় আমি মা ও আমার চাচা মাটিতে পড়ে যাই। পরবর্তিতে উঠে দাড়াতেই চেয়ারম্যান পিকলুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসী পলাশ ও রুবেলসহ ৯/১০ জন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এ সময় আমাকে রক্ষায় মা রুমা বেগমও চাচা তরিকুল ইসলাম এগিয়ে এলে তাদের উপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে। গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আহত নিলয় হাওলাদারের মা রুমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ছেলে নিলয়কে মারতে মারতে অজ্ঞান করে ফেললে আমি চেয়ারম্যান পিকলুর পা ধরে প্রান ভিক্ষা চাই এ সময় পিকলু চেয়ারম্যান আমাকে লাথি মেরে ফেলে পিটিয়ে জখম করে আমার পরিধেয় বোরখা ছিড়ে ফেলেছে। এক পর্যায়ে আমার ছেলের হোন্ডা মটরসাইকেলটি রিকসা ভ্যানে তুলে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে নিয়ে সেখানে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সম্পুর্নভাবে ভস্মীভূত করেছে। শত শত মানুষ এ দৃশ্য দেখলেও চেয়ারম্যানের ভয়ে আমাদের রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা সৈকত গুহ পিকলু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হামলা মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি এবং আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। শুনেছি নববর্ষের শোভা যাত্রার র‌্যালিতে থাকা এক ছাত্রীকে নিলয় নামে এক বখাটে উত্যক্ত করেছে। এ সময় স্থানীয় লোকজন মারধর করেছে। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় নিলয় হাওলাদারের মা রুমা বেগম বাদি হয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্হাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ শুক্রবার এজাহার নামীয় আসামি পলাশ (২৭) ও মোঃ রুবেলকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech