ডেস্ক রিপোর্ট:
লন্ডনে সকাল থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এই বৃষ্টি ঝড়েছে আজ যেনো বিদায় দিতে কিংবদন্তী লেখক, সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরীকে। প্রকৃতির উজার করা কান্নায় লন্ডনে শরীক হয়েছিলেন হাজারো মানুষ। লন্ডন সময় বাদ জুম্মা জানাযা অনুষ্ঠিত হয় ব্রিকলেন মসজিদে।
ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ যোগ দেন জানাযায়। শেষ দেখা দেখতে আসা মানুষের ভিড়ে মসজিদে জায়গা সংকুলান না হয়ে অনেকেই বাইরে বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে জানাযায় শরীক হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার লন্ডন সময় সকাল ৬টা৪৯ মিনিটে বার্নেট হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই প্রখ্যাত সাংবাদিক। শুক্রবার বিকালের মধ্যে মরদেহ হাসপাতাল থেকে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে নিয়ে আসা হয় ব্রিকলেন জামে মসজিদের হিমাঘারে।
শুক্রবার বাদ জুম্মা ১টা৪৫ মিনিটে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় আবদুল গাফফার চৌধুরীর ছেলে অনুপম চৌধুরী সবার কাছে বাবার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, আমার বাবা সারাজীবন বাংলাদেশ ও মানুষের জন্য লিখেছেন, কথা বলেছেন।
এসময় বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদুর রহমান ফারুক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
জুম্মার পর আবহাওয়া ভালো হওয়ায় মরদেহ নিয়ে আসা হয় আলতাব আলী পার্ক শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। হাজারো মানুষ তাদের এই প্রিয় লেখককে বিদায় দিতে আসেন। আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহ ঢেকে রাখা হয় বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে। যুক্তরাজ্য হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম ফুল দিয়ে শেষ বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। এরপর একে একে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ফুল দিয়ে শেষ বিদায় জানায় তাদের প্রিয় লেখককে।
সম্প্রতি ব্রিটেনে ভ্রমণ করতে আসা সাবেক সরকারি কর্মকর্তা শাহরিয়ার বিপ্লব বলেন, লন্ডনে আসার সময় অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল উনাকে দেখতে যাবো। আজ উনার জানাযায় অংশ নিতে হলো। বাংলাদেশ হারিয়েছে একজন অভিভাবকে।
ব্যারিস্টার সাঈদ আলী জিরু বলেন, ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ছাত্রজীবন থেকে ব্রিটেনে আছি, তিনি আমাদের অভিভাবক ছিলেন।
সাংবাদিক ও লেখক নবাব উদ্দিন বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের সম্পদ ছিলেন। ছিলেন তৃতীয় বাংলায় আমাদের ভরসার জায়গা।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, মরদেহ বাংলাদেশে নেয়ার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন কাজ করছে। খুব দ্রুত আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মরদেহ দেশে পাঠানো হবে। শায়িত করা হবে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শায়িত করা হবে।