নিজস্ব বার্তা পরিবেশক:
বকুল বেগম ।বয়স পঞ্চাশোর্ধ।বাল্যকাল থেকেই অভাব অনটনে চলমান রয়েছে তার দিনযাপন। স্বামী সোহরাব মৃধা দীর্ঘ ২৫ বছর পূর্বে তার গর্ভে ৫ মাসের সন্তান রেখে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন । নলছিটিতে বাবা ও শ্বশুর বাড়ির থেকে সকল সম্পত্তি বঞ্ছিত অসহায় বকুল চলে আসেন বরিশাল নগরীতে ।জীবিকার তাগিদে বিল্ডিং নির্মান কাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন স্থানে ভাড়াটিয়া হিসেবে থেকে কোন মতে অনাহারে-অর্ধাহারে সংসার চালিয়ে আসছেন । ছেলে রুবেল বর্তমানে বাসের হেলপার হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়া সংসারে বকুল বেগম তার বৃদ্ধ মা স্বরবানু(৭০)ও ছেলেসহ নগরীর ২৫ নং ওয়ার্ডের রুপাতলী এলাকায় রাজাপূরের বাসিন্দা খালেদা বেগম নামে এক নারীর দেয়া ঝুপড়ি ঘরে আশ্রিত হিসেবে রয়েছেন । কিন্ত মাথা গোজার সেই ঠাইটাও আর কিছুদিন পর থাকছেনা বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন অসহায় বকুল ।আশ্রয় দেয়া ঘর মালিক বাড়ি নির্মাণ করবেন বলে জানিয়েছেন । আর এতেই এখন ভুমিহীন ও আশ্রয়হীন বৃদ্ধ বকুল বেগম তার মা ও ছেলেসহ মাথা গোজার ঠাই প্রাপ্তিত কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, স্বামী যহন আছিল তহন খুব ভালই ছিলাম। মোগো কোন চিন্তাই ছিলনা। মোর পেটে যখন ৫ মাসের ছেলে সন্তান তহন হে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এরপর হে মারা যাওয়ার পর মোগো খাইয়া বাইচা থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। দুই বেলা দুই মূঠো ভাত খাইতে কাজে লেগে পড়ি। কখনো বিল্ডিং নির্মানের কাজে শ্রমিক হিসেবে বালু, ইট টানি আবার কখনও বাসা বাড়িতেও ঝিয়ের কাজ করি। সেই থেকে এখনো কাজ কইরা খাইতেছি। স্বামী ও বাপের বাড়ি থেকে কোন জমি বা সুবিধা পাইনাই। ৯ বছর পূর্বে বরিশালে যহন আসি তহন এদিকে আইসা ঝড়াজীর্ণ ঘর ভাড়া লইয়া মুই , মোর মায় ও ছেলেসহ থাকছি। খালেদা আফায় মোগো আশ্রয় দিছে। অনেকদিন যাবত রুপাতলীতেই তার আশ্রিতা হিসাবেই আছি। কিন্ত হুনছি কিছুদিনপর সে এহানে বাড়ি বানাইবে। তাই এহানেতো আর থাকতে পারমু না । মোর পোলা বাসের হেলপারি করে আর মুই বাসা বাড়ি ও শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন সময় বিল্ডিং বানানোর কাজ করি। তয় এতে এহন আর সংসার চলেনা ।এর মধ্যে থাকবেনা ঘরও কোথায় থাকমু? কি করমু? চিন্তায় থাহি। তয় আগের মত এহন আর কাজও করতে পারিনা। শরীরের অবস্থা ভালনা । হারাজীবন কাজ কইরা শরীর এহন আর সয়না। ভারী কাজে গেলেই শরীর খারাপ হইয়া যায়। অসুস্থ হইয়া পড়ি। হুনছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যারা অসহায় , ভুমিহীন হেগো ঘর দিচ্ছেন। আমারতো জমিও নেই ঘর নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটাই আকুতি আমাকে যেন একটি ঘর দেয়া হয়। যাতে আমি ,বৃদ্ধা মা ও ছেলেসহ একটি নিশ্চিত মাথা গোজার ঠাই পেতে পারি। এ বিষয়ে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মুনিরুজ্জামান প্রতিবেদকের কাছে অসহায় বৃদ্ধা বকুল বেগমের বিষয়টি জানতে পেরে অসহায় ভুমিহীনদের জন্য বরাদ্দ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর প্রাপ্তিতে তাকে একটি আবেদন করার জন্য জানিয়েছেন।