জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করে ব্যবসা পরিচালনার দায়ে নগরীর হাসপাতাল রোডস্থ এক ফার্মেসী মালিককে পুলিশে সোর্পদ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে ফার্মেসী মালিক মামুন তালুকদারকে পুলিশে সোর্পদ করা হয় বলে জানিয়েছে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড সুপারিনটেনডেন্ট সহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ১৫ জুন বুধবার দুপুরে হাসপাতাল রোড এলাকায় অভিযান পরিচালিত করা হয়। এসময় সদর হাসপাতালের বিপরীতে থাকা মেসার্স মামুন মেডিকেল হল নামক ফার্মেসীতে গিয়ে ট্রেড লাইসেন্স দেখতে চাইলে প্রতিষ্ঠান মালিক মামুন তালুকদার বই না দিয়ে দুই পাতার ট্রেড লাইসেন্স-এর ফটোকপি দেখান। প্রদানকৃত ওই দুই পাতার ট্রেড লাইসেন্স-এর ফটোকপি তাৎক্ষনিক পর্যালোচনা করে জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে বলে প্রমানিত হয়। জালিয়াতির বিষয়টি প্রতিষ্ঠন মালিককে অবগত করে তাকে সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স শাখায় যোগাযোগ করতে বলা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান মালিক গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত এব্যাপারে যোগাযোগ না করায় পরে তাকে কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স শাখায় ডেকে নেয়া হয়। ট্রেড সুপারিনটেনডেন্ট সহিদুল আরো জানায়, শাখার সকল নথি ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল রোডে মেসার্স মামুন মেডিকেল হল নামক প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে এখন পর্যন্ত কোন ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হয়নি। ওই প্রতিষ্ঠান মালিক মামুন তালুকদার বই না দিয়ে দুই পাতার ট্রেড লাইসেন্স-এর যে ফটোকপি দিয়েছে তাতে দেখা যায়, ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর ট্রেড শাখার প্রধান রাজস্ব কর্মকতা (ইসরাইল হোসেন) , লাইসেন্স সুপানিটেনডেন্ট (আজিজুর রহমান ) ও ইন্সপেক্টরের স্বাক্ষর রয়েছে। কিন্তু উল্লেখিত তারিখে ওই তিনজনের কেউই দায়িতেই¡ ছিলেন না। ওই তারিখে স্বাক্ষর হওয়া অন্যান্য বইয়ে শুধুমাত্র রাজস্ব কর্মকতা বাবুল হালদার ও সুপানিটেনডেন্ট সহিদুলের স্বাক্ষর রয়েছে। এবং ইন্সপেক্টরের পদটি ওই সময়ে শূন্য ছিলো। এবিষয়ে অভিযুক্ত মামুন জানান, তিনি ড্রাগ লাইসেন্স ও ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী বাজার সংলগ্ন সওদা ফার্মেসীর মালিক মশিউর রহমান সুমনের সহযোগিতা নিয়েছিলেন এবং এবাবদ তাকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করেছিলেন। সুমন ওই সময়ে মামুনকে ট্রেড লাইসেন্সের বই না দিয়ে কর্পোরেশেনের ট্রেড লাইসেন্স সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর ও সিলসহ শুধুমাত্র দুটি পাতা দিয়েছিলেন। এর বেশী তিনি জানেন না। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস জানান, অন্যের ট্রেড লাইসেন্সে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজের নাম, ঠিকানা ও প্রতিষ্ঠানের নাম বসিয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়ার বিষয়টি প্রমানিত হওয়ায় বিসিসির ট্রেড সুপারিনটেনডেন্ট সহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ফার্মেসী মালিক মামুন তালুকদারকে অভিযুক্ত করে কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগপত্র দাখিন করেছেন। এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কোতয়ালী থানা পুলিশ মামুনকে তাদের হেফাজতে নিয়েছেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরো বলেন, বেশকিছু দিন ধরে উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু অসাধু ব্যক্তি কর্পোরেশেনের কাগজপত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি কে অনৈতিক সুবিধা গ্রহনের চেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছে। এধরনের কয়েকটি জালিয়াতির বিষয় প্রমানিত হওয়ায় কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকার জন্য অঅহবান জানান প্রশাসনিক কর্মকর্তা।