ডেস্ক রিপোর্ট :
দেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গণপরিবহন ও লঞ্চের ভাড়াও বৃদ্ধি পেতে পারে এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে। আর এ ভাড়ার পরিমাণ কত বাড়তে পারে, তার একটি ধারণা দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
শনিবার (৬ আগস্ট) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে দূরপাল্লার বাসে (৫২ আসনের) প্রতি কিলোমিটারে প্রত্যেক যাত্রীর ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সা। ডিজেলে দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা বাড়ানোয় প্রতি কিলোমিটারে ২৯ পয়সা বেড়ে এই ভাড়া হবে ২ টাকার মতো। প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়ছে ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ।
বর্তমানে সিটি এলাকায় (৫২ আসনের) বাসে প্রতি কিলোমিটারের প্রত্যেক যাত্রীর ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সা। প্রতি কিলোমিটারে ২৮ পয়সা বেড়ে এই ভাড়া হবে ২ টাকা ৪৩ পয়সার মতো। প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়ছে ১৩ দশমিক ১৬ শতাংশ।
এ ছাড়া লঞ্চে বর্তমানে প্রতি কিলোমিটারে প্রত্যেক যাত্রীর ভাড়া ২ টাকা ১৯ পয়সা। প্রতি কিলোমিটারে ৪২ পয়সা বেড়ে এই ভাড়া হবে ২ টাকা ৬২ পয়সা। সে হিসাবে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়ছে ১৯ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এর আগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর দেশে দূরপাল্লার বাস-মিনিবাসের ভাড়া গড়ে ২৭ শতাংশ বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভাড়া নির্ধারণী কমিটি। একইভাবে মহানগর এলাকার বাসভাড়া ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়।
সেই সঙ্গে সব লঞ্চের ভাড়া ৩৫ শতাংশ বাড়িয়েছিল অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সে হিসাবে কিলোমিটারপ্রতি ৬০ পয়সা করে ভাড়া বেড়েছিল।
বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাত থেকে বাড়ানো হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম, যা জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির হারের দিক থেকে রেকর্ড।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যত দিন সম্ভব ছিল, তত দিন সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর চিন্তা করেনি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই দাম কিছুটা সমন্বয়ে যেতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের দাম পুনর্বিবেচনা করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এখন থেকে ডিজেলের দাম হবে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা, যা এত দিন ৮০ টাকা ছিল। কেরোসিনের দামও একই হারে বাড়ানো হয়েছে। নতুন দাম ডিজেলের সমান, অর্থাৎ ১১৪ টাকা। সেই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে পেট্রল ও অকটেনের দামও। পেট্রলের নতুন দাম প্রতি লিটার ১৩০ টাকা, যা এত দিন ৮৬ টাকা ছিল। অকটেনের দাম ৮৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে।
দেশে দাম কম থাকায় তেল পাচারের আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতের কলকাতায় ডিজেলের দাম প্রতি লিটার বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১৪ টাকা। পেট্রলের দাম ১৩০ টাকা। দেশে দাম কম থাকায় পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো সময়ের দাবি।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বিপিসি গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই) জ্বালানি তেল বিক্রি করে ৮ হাজার ১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমতির দিকে। আগামী দিনগুলোয় তা আরও কমবে।